লালকেল্লা আগেই দত্তক দেওয়া হয়ে গেছে। এরপর একদিন নেতাজী যে ঘরটায় শুতেন, সেই ঘরে শোয়ার নিলাম করা হবে ট্রিভাগোতে। আপনি চাইলে ওই মহানিষ্ক্রমণের সময় ব্যবহার হওয়া গাড়িটা ও ভাড়া নিতে পারবেন৷ ওতে বসে বিয়ার খাবেন সেদ্ধ ছোলা দিয়ে। গাড়িটা চালাতে পারবেন না। বাজার চলছে ওটা উপভোগ করুন।
তারপর ‘জনগনমন’র সুর এক রেখে পাঁচতলা শপিং মলের বিজ্ঞাপন বানানো হবে। কারণ দেশে বাজার অর্থনীতি সাবালক হবে৷ স্যান্ডি সাহা আর হিরো আলমকে নিয়ে কোন পরিচালক ‘গুগাবাবা’ বানাবার কথা ভাববেন৷ ভূতের রাজার কাছে বিনা ইন্টারেস্ট লোন তো আগেই চাওয়া হয়েছে বিজ্ঞাপনে। আপনি একধাপ এগিয়ে চারটে বর চেয়ে নেবেন। ওটাই পোয়েটিক লাইসেন্স। আপনি কিচ্ছু টি বলতে পারবেন না। কারণ ‘সিল্প ও সোংস্কৃতিক সাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করা পাপ”৷ ওটা ফ্যাসিজম। আর হস্তক্ষেপ করলে আপনি বিশ্বভারতী৷ কারণ ততক্ষণে লোক লস্কর সহ ওই অগা পরিচালক যে গুপিবাঘার রিমেক করবে ঠিক করেছে, সে ভিক্টিম কার্ড খেলে দেবব্রত বিশ্বাসের উদাহরণ দিয়ে ফেলেছে। এবার কোনটা ঘি এর হালুয়া আর কোনটা হবে হাগু তার বিচার করবে কে?
বাঙালির হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে হেব্বি রাগ। হিন্দি হিন্দু হিন্দুস্তান নিয়ে ও। আর বাঙালি হওয়ার অহং নিয়ে ও৷ কিন্তু আত্মবিস্মৃত হয়েই থাকবো। যে গানটা এ রাজ্যের প্রদেশ সংগীত হতে পারতো, যে গানটা দিয়ে সমস্ত রাজ্য সরকারি অনুষ্ঠান শুরু হতে পারতো, সেই গান শুনতে হচ্ছে এভাবে।
যতবার এই গান শুনি বাঙালি হিসেবে গলার কাছে কি যে দলা পাকিয়ে আসে৷ ওটা গঙ্গা না পদ্মার জন্য, জানি না। কিন্তু আসে। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানকে কদাকার বিজ্ঞাপন বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হলো৷ ছেড়ে দেওয়া গেল কারণ এই গানটি রাষ্ট্র বেছে নেয়নি রাষ্ট্র গান হিসেবে৷ এই গানটি গাওয়া হবে কি হবে না তাই নিয়ে হিন্দু মুসলমান লড়াই বাঁধে না৷ এই গানটি এখনো কোন ছবিতে কবীর সুমন থেকে পটা, বাবুল সুপ্রিয় মায় অরিজিৎ সিং একসাথে গান নি৷
শীতকাল এসে গেছে৷ বাঙালি লেপের তলায় সুপর্ণাকে জড়িয়ে শীতঘুম দিচ্ছে। স্বপ্নে একটা ছোট্ট ফ্ল্যাট, এক বিরাট বিপ্লব ভাবছে। এতে ডিএল রায়ের নস্টালজিয়া উস্কানো অপরাধ৷ তারচেয়ে আসুন খোয়াইতে ডুপ্লে ফ্ল্যাটের হদিশ নিই৷ বাউলিয়ানা কনক্লেভ গোছের একটা নাম হবে৷ আমাদের ছোট নদীকে টেম্পারেচার কন্ট্রোল করে পুল বানানো হবে৷ ডেক চেয়ারে মাটি লেপে দেওয়া হবে আর সোঁদা গন্ধ স্প্রে।
আপনার কষ্ট করে জমানো টাকা দিয়ে কেনা একটুকরো রাবীন্দ্রিকতা৷ ঘর ও হলো, সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণ ও হলো আর একটু ‘সাংস্কিতিক’ পরিমন্ডল ও তৈরি করা গেল।
[embedyt] https://www.youtube.com/watch?v=cXSG-q1n4hg[/embedyt]
( মতামত লেখকের ব্যক্তিগত )