‘যারা ধর্মীয় ভেদাভেদের রাজনীতি করেন তারা সমাজের শত্রু। তাদের থেকে সাবধানে থাকবেন।’ সোমবার ঝাড়্গ্রামের জামবনির প্রশাসনিক সভা থেকে বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে বিজেপিকে এভাবেই তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হুল দিবসের পর আবারও জঙ্গলমহল সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়্গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কোথায় খেতে দেবে, পরতে দেবে, শিক্ষা দেবে, চিকিৎসা দেবে, আলো দেবে, দেশকে বাঁচাবে তা না করে, সারাক্ষণ কীভাবে দাঙ্গা লাগাবে চক্রান্ত করে বেড়াচ্ছে’।
এদিন প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ একের পর এক ইস্যু উত্থাপন করে তিনি আক্রমণ করেন গেরুয়া শিবিরকে৷ অভিযোগ করেন, রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার নেশায় মেতে রয়েছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা৷ সিপিএম-এর সমর্থকরাই জামা পালটে বিজেপির হয়ে কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
জঙ্গলমহলে মাওবাদী দমনে নিজেদের নিজেদের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘যখন এখানে রক্ত ঝরত, এখানে তখন কেউ আসত না। সেই সময়ও আমি এসেছি। পিড়াকাটার জঙ্গলে তিন ঘণ্টা আটকে থেকেছি। কিন্তু দমে যাইনি। বুকে হাত দিয়ে বলুন, উন্নয়ন হয়েছে কি হয়নি?’ পাশাপাশি ছত্তিশগড়ে মাও মোকাবিলায় বিজপির ব্যর্থতাকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি ছত্তিসগড়ে এতদিন আছে, তাও কি মাওবাদীদের দমন করতে পেরেছে? পারেনি। রোজ মানুষ খুন হচ্ছে। একটা কাজ করতে পারে না আর বড় বড় কথা’।
জঙ্গলমহলে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গলমহলে ২৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি হয়েছে। আরও ১৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি হবে। জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েরা যাতে আরও চাকরি পায়, সেদিকে দেখব’।
নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে জঙ্গলমহলে বাইরে থেকে লোক ঢোকানোর অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাইরে থেকে লোক এসে ভুল বোঝাচ্ছে, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। কালো টাকা ছড়িয়ে অপপ্রচার করছে। খেয়াল রাখবেন বিষয়গুলির ওপর। মানুষের কাছে কাছে গিয়ে আসল কথাটা তুলে ধরুন। এটা আপনাদেরই দায়িত্ব’।
প্রসঙ্গত, সোমবার থেকেই পাঁচদিনের জেলা সফর শুরু করলেন মমতা। কোর কমিটির বৈঠক থেকেই এই সফরের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এই সফরে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া সেরে মুখ্যমন্ত্রী যাবেন বর্ধমান। পশ্চিম বর্ধমান ও দুর্গাপুর সফর সেরে ফিরবেন কলকাতা। এই সফরে একদিকে যেমন প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর, সঙ্গে রয়েছে জনসভাও। সেই সভা থেকে বিভিন্ন খাতে পরিষেবা প্রদানের পাশাপাশি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি।