ভোটের আগে ছিল সকলকে ডরিয়ে ধমকিয়ে আর ভুল বুঝিয়ে পদ্মে ভোট দেওয়ানোর পালা। আর বোর্ড গঠন হতেই অস্ত্র হাতে গোটা গ্রামে সন্ত্রাস চালালো রামভক্তরা। গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল ঝাড়গ্রাম ব্লকের নেদাবহড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, গন্ডগোলের মাঝে ধারাল অস্ত্র নিয়ে বিজেপি সমর্থকরা হামলা চালায়। তাতে আহত হয়েছেন ৩ পুলিশকর্মীও। গুরুতর জখম ১ পুলিশ কনস্টেবলকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লেদাবহড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ৬টি আসন। গ্রামবাসীদের ডরিয়ে ধমকিয়ে ৬টি আসনেই বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হন। কিন্তু পরে বিজেপির বিরোধীতা করে ২ জন তৃণমূলে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার ছিল বোর্ড গঠন। সেখানে বিজেপি প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন করে। অভিযোগ, এরপরই কিছু বিজেপিকর্মী ওই দুই তৃণমূল প্রার্থীর ওপর হামলা চালায়। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ তাতে বাধা দিতে যায়। ফলে পুলিশের সঙ্গেই ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় তাঁদের। সেই সময়ই ধারাল অস্ত্র দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে ওই উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরা।
এ ঘটনায় তৃণমূল ঝাড়গ্রাম ব্লক সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মাহাতো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিজেপি কর্মীরা ধারাল অস্ত্র হাতে আমাদের দুই প্রার্থীর ওপর আক্রমণ করতে এলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন পুলিশকেই আক্রমণ করে ওই হামলাকারীরা।’
তৃণমূলের দাবি, রাজ্যজুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে হারে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে, তার সঙ্গে বিজেপি এঁটে উঠতে পারছে না। তাই রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াতে চাইছে তারা। কিন্তু রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এতটাই দৃঢ় যে, সেই কাজে সফল না হয়ে তারা হিংসার পথ নিচ্ছে। এদিনের ঘটনা তারই প্রমাণ। তবে তাদের হিংসার রাজনীতিও সরকার, পুলিশ-প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষ ব্যর্থ করে দেবেন।
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নেদাবহড়া গ্রামপঞ্চায়েত অফিস। জঙ্গলঘেরা এই এলাকায় পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে এখনও উত্তাপ রয়েছে। বিজেপির সন্ত্রাসের ভয়ে গোটা এলাকা থমথমে। তবে পুলিশি টহল চলছে। জানা গেছে, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।