গত বছর ক্লাব ছাড়ার আগে বলে গিয়েছিলেন, ঋণ শোধ করতে মোহনবাগানে ফিরবেন। আবারও তিনি ফিরছেন। শারদীয়া উৎসবের প্রাক্কালে বড় উপহার পেলেন মোহনবাগান সদস্য–সমর্থকেরা। আবারও হাইতিয়ান ম্যাজিশিয়ান সনি নর্ডির সই সবুজ–মেরুনে। এবং, এই উপহার তুলে দিলেন মোহনবাগানের মুশকিল আসান টুটু বসু। ক্লাবের সচিব হয়ে প্রথম কাজটাই টুটু এমন করলেন, সদস্য–সমর্থকদের আবারও মন জয় করে নিলেন তিনি।
পুজো মিটলেই ক্লাবের নির্বাচন। সনি নর্ডি যে নির্বাচনী অঙ্কে বড় ফ্যাক্টর, তা সকলেরই জানা। নির্বাচনের আগে সনিকে সই করিয়ে চমকটা দিয়ে রাখল বাগানের বিরোধী গোষ্ঠী। সনির সঙ্গে অনবরত যোগাযোগ রেখে গেছেন দেবাশিস দত্ত, সৃঞ্জয় বসু এবং দুবাইতে থাকা অর্ণব মুখার্জি। এমনকী নির্বাচনী প্রচারে সনিকে নিয়ে আসার ব্যাপারে সদস্যদের আশ্বস্ত করেছিলেন টুটু।
মিশরের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ওমর মোহনবাগানে আসছেন শুনে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন সনি। ফেসবুকে মোহনবাগান ছাড়ার কথা পোস্ট করেও ডিলিট করে দেন। তার পরই অর্ণব, দেবাশিসরা সনিকে প্রস্তাব পাঠান। প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন তিনি। তবে, প্রথমদিকে সনি মেডিক্যাল ও ফিজিক্যাল ফিটনেস টেস্ট দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে রাজি হন। কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী সনির শারীরিক ফিটনেস দেখে নেবেন। কারণ, ফুটবলারদের এসিএল ইনজুরি মারাত্মক। হাইতিতে রি–হ্যাবের ভিডিও সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেছিলেন সনি। বাগান কোচ বলেন, ‘ও আসুক কলকাতায়। ওর মেডিক্যাল ও ফিজিক্যাল ফিটনেস দেখা হবে। ক্লাবের সঙ্গে ওর সম্পর্ক ভাল। ও আসতে চাইছে। কর্তাদের বলেছি, ওকে নিয়ে আসা হোক। মিশরের বিদেশিও আসছে। দু’জনকেই দেখব।’ ওমর ভিসা পেয়ে গেছেন বৃহস্পতিবারই।
এদিনই ভিসার আবেদন করেছেন সনিও। তিনি এখনও মোহনবাগান জনতার কাছে আবেগ। তঁার আসার খবর রটতেই সোশ্যাল সাইটে বাগান সমর্থকরা আনন্দিত। গত মরশুমে বারাসতের মাঠে চোটটাই সব শেষ করে দিয়েছিল। আই লিগ অল্পের জন্য ফসকে গিয়েছিল বাগানের। চোখের জলে বাগানকে বিদায় জানিয়েছিলেন সনি। এবার কন্যাসন্তান হয়েছে। ঘনিষ্ঠ মহলে সনি জানিয়েছেন, মেয়ের জন্য এবার আই লিগ জিততে চান।
সৃঞ্জয় বসু বলছেন, ‘সনি মেডিক্যাল ও ফিজিক্যাল টেস্ট দিতে রাজি হয়েছে। তার পরই আইএফএ–তে সই হবে ওর। রাজি যখন হয়েছে, এর থেকেই বোঝা যায় ও কতটা আত্মবিশ্বাসী। আর ফুটবলারটা যখন সনি নর্ডি, তখন ঝুঁকি তো একটু নিতেই হয়। তাছাড়া ও দারুণ রি–হ্যাব করছে। ওমরও আসছে। কোচের সঙ্গে কথা বলেই সনিকে আনা হচ্ছে। ডিফেন্সে তো দলজিৎ যোগ দিয়েছে।’ দেবাশিস দত্তের কথায়, শেখ জামাল ধানমন্ডি থেকে সনিকে নিয়ে আসা অনেক কঠিন ছিল। চার বছরে ওর সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এক মাস ধরে অনেক কথাবার্তা হয়েছে ওর সঙ্গে। ও মেডিক্যাল ও ফিজিক্যাল টেস্ট দিতে রাজি হয়েছে।’
পুজোর উপহার পেয়ে খুশি বাগান–জনতাও।