জনতার দরবারে পৌঁছতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতেও তিনি অদ্বিতীয়। পুজোর উদ্বোধন করছেন, চক্ষুদান করছেন, স্তোত্র পাঠও। পাশাপাশি প্রতিটি পুজো উদ্বোধনেই তিনি লাইভ।
সোশ্যাল মিডিয়ার শিখরে ওঠার যুগে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে চলতি বছরের প্রতিটি পুজো উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার করছেন মমতা। আর জননেত্রী ফেসবুকে ‘লাইভ’ হলে জনতার দরবার বসতেই বা কতক্ষণ? আর জনতার দরবার মানেই প্রশংসা, অভিযোগ, অনুযোগ, আর্জির স্রোত। জননেত্রীকে ‘হাতের সামনে’ পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানাচ্ছেন মানুষ। কেউ বলছেন রাস্তার সমস্যা, কেউ চাকরির। কেউ আবার ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ‘মোদী অসুর’কে বধ করার জন্য ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ মমতার পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করছেন। পুজো উদ্বোধনের ফেসবুক লাইভ এভাবেই প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গে জনসাধারণের সেতুবন্ধনের কাজ করছে।
কমেন্টও পড়ছে গাদা গাদা। আসছে আর্জি। কেউ তুলে ধরছেন চুক্তিভিত্তিক পলিটেকনিক শিক্ষকদের বেতন সমস্যার কথা, কেউ জানাচ্ছেন সিভিক পুলিশেরা পুজোর বোনাস না পেয়ে কষ্টে আছে। মমতাকে ‘মা’ সম্বোধন করে সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার অনুরোধ জানাচ্ছেন কেউ। আসলে মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে সরাসরি তাঁর কাছেই সমস্যা জানালে দ্রুত সুরাহা হবে মনে করছে জনতা।
কিন্তু আদৌ কি কাজ হচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, অবশ্যই। গত কয়েকদিনে মুখ্যমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের লাইভে যত পরিষেবাগত অভাব-অভিযোগ জমা পড়েছে, তা প্রাথমিক বাছাইয়ের পর রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিবদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে জানানো হচ্ছে বিভাগীয় মন্ত্রীকে। এই গোটা কাজের দায়িত্বে আছে মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজের কারিগরি দিকের দায়িত্বে থাকা বিশেষ দল। অভিযোগ সত্যি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমন আশ্বাসও মিলছে।
শুধু অভাব-অভিযোগ নয়, মমতার ‘লাইভ’ উদ্বোধন আসলে বাড়ি বসেই প্রতিমা দর্শনের সুযোগ। প্রচুর টেকস্যাভি প্রবীণ-প্রবীণা ধন্যবাদ জানিয়ে কমেন্টে লিখেছেন, তোমার জন্যই বাড়িতে বসে ঠাকুর দর্শন হয়ে গেল। সত্যিই তো। এই লাইভের সৌজন্যেই চেতলা অগ্রণী, বাগবাজার, বোসপুকুর, একডালিয়ার মতো নামজাদা পুজো দেখে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজে থাকা প্রায় সাড়ে ২৮ লক্ষ মানুষ।