দু’দিন আগেই বীরভূমের রামপুরহাটের সভায় দাঁড়িয়ে সিবিআই নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, তাঁর ছবি, লেখা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সিবিআই। কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ করছি। যদি তারা দেখাতে পারে ছবি আঁকার এক পয়সা আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে দমানো যাবে না। কিন্তু এরপরেই আরও উঠেপড়ে লেগেছে সিবিআই। যা থেকে কেন্দ্রের মোদী সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল, বৃহস্পতিবার তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র তহবিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী মানিক মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। মূলত ‘জাগো বাংলা’র আয় কত, কীভাবে সেই আয় হয়, কত টাকা খরচ ইত্যাদি বিষয়ে মানিকবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। পাশাপাশি, দু’একদিনের মধ্যে তৃণমূলের রাজ্যসভার এক সাংসদকেও ডাকা হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এই মুহূর্তে সংসদ অধিবেশন চলছে, তা শেষ হলেই ‘জাগো বাংলা’র তহবিল নিয়ে আরও বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিতে রাজ্যসভার ওই সাংসদকে ডাকা হবে।
সিবিআই-এর এই ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই জানিয়েছেন, যাঁকে খুশি সিবিআই ডাকতে পারে, তাতে কিছু এসে যায় না। প্রতিবারই নির্বাচনের মুখে সিবিআই-এর তৎপরতা বাড়ে বলে অভিযোগ মমতার। বৃহস্পতিবারও বইমেলার উদ্বোধনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেন।
সম্প্রতি সিবিআই বাংলা সিনেমার প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে গ্রেফতার করেছে। তারপরই একাধিক টুইট করে সিবিআইকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি লেখেন, মুণ্ডুহীন এজেন্সি এখন মেরুদণ্ডহীন বিজেপিতে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বিঁধে তিনি এ-ও বলেন, অখিলেশ, মায়াবতী কাউকেই বাদ দিচ্ছে না বিজেপি। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, সবাই বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এরপরও তৃণমূলের রাজ্যসভার এক সাংসদকে তলব এবং সরাসরি মানিক মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেত্রী।
দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ভোটের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে খুব একটা সুবিধাজনক জায়গায় নেই মোদী সরকার। বিরোধীদের একের পর এক অভিযোগে কার্যত দিশেহারা কেন্দ্র। সেই কারণেই কি উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার? বিরোধীদের ওপর চাপ বাড়াতেই কি এইভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে? উঠছে এমনই একাধিক প্রশ্ন।