বড়সড় বিতর্কে জড়িয়েছেন ‘প্রতিবাদী’ ডাক্তারদের একাংশ। আর জি কর কাণ্ডের পর তাঁদেরই প্রতিবাদমূলক কর্মবিরতির জেরে প্রবল দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। পাননি যথাযথ চিকিৎসা। ঘটেছে একাধিক রোগীমৃত্যুর ঘটনাও। অথচ এই প্রতিবাদী ডাক্তাররাই বেসরকারি হাসপাতালে, নার্সিংহোমে চুটিয়ে রোগী দেখেছেন, অপারেশন করেছেন! রোজগার করেছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। কর্মবিরতি চলাকালীন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের অপব্যবহার নিয়ে এবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বাস্থ্যসাথীর বরাদ্দ অপব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অপ্রিয় সত্য হলেও এ-ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় স্বাস্থ্যসাথী খাতে সরকারের বাড়তি খরচ হয়েছে। তবে জনগণের টাকার এই অপব্যবহার সরকার বরদাস্ত করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি মমতা জানান, ওই সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের অপব্যবহার নিয়ে যথাযথভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। সমস্ত অভিযোগ ভালভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে (ডাবল ক্রস চেকিং)। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অন্যদিকে রাজ্যের সাম্প্রতিক ট্যাব কেলেঙ্কারির পিছনে জামতাড়া গ্যাং-এর হাত আছে বলে মুখমন্ত্রী জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১০ আগস্ট থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর এই সময়কালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৩১৫ কোটি টাকা। যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এই কর্মবিরতির জেরে ওই সময়কালে স্বাস্থসাথী খাতে গড়ে দৈনিক ৭ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। হিসেব কষে দেখা গিয়েছে, আন্দোলনের জেরে দৈনিক ১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা বাড়তি গুনতে হয়েছে রাজ্যকে।
এদিন বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়ক সমীরকুমার জানা প্রশ্ন করেন যে ২০২৩-’২৪ অর্থবছরের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে মোট কত মানুষ উপকৃত হয়েছেন আর কত টাকা খরচ হয়েছে। জবাবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে ২১ লক্ষ ২৭ হাজার ২৪৯ জন মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন। এজন্য ২ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আর শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৮০ লক্ষ ২৫ হাজার ৮৭৬ জন উপকৃত হয়েছেন। মোট ১০ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ব্যয়িত হয়েছে।




