এবার ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানাতেও পশু, পাখিদের দত্তক নিতে পারবেন ইচ্ছুকরা। কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানার মতো এবার সেখানেও এমন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রাণী দত্তক নেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন রাজ্য বনদফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। এবিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফওর সঙ্গে কথাও বলেছেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর আগ্রহ প্রকাশে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও কৌতুহল বাড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ঝাড়গ্রাম বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে দত্তক নিতে আগ্রহী ছয় জন ব্যক্তি আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন। আর এই দত্তকের জন্য বাৎসরিক অথবা মাসিক অর্থ প্রদান করতে হবে বনদফতরকে। সেই অর্থে দত্তক নেওয়া প্রানীগুলির বিশেষ পরিচর্চা করা হবে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দুটি ময়ূর, সজারু ও বিভিন্ন ধরনের পাখি-সহ মোট ছয়টি প্রাণীকে দত্তকের জন্য আবেদন পত্র জমা পড়েছে। তবে প্রক্রিয় এখনও চলছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজ্য জু অথরিটির নির্দেশ এলে ঝাড়গ্রাম বনদফতর, দত্তক নিতে ইচ্ছুকদের চিড়িয়াখানায় যাওয়ার নিয়মাবলী জানিয়ে দেবে। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও শেখ ফরিদ বলেন, “ইতিমধ্যে ছয়জন দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। পশু, পাখিদের দত্তক নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ এলে আমরা নিয়মগুলি বিস্তারিত জানাব।”
পাশাপাশি, রাজ্য বনদফতরের রাষ্ট্র মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, “আমি জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কের প্রাণী দত্তক নিতে চাই। সেক্ষেত্রে কী ধরনের প্রাণী দত্তক নেওয়া যায় তা নিয়ে বনদপ্তরের পরামর্শ নেব। আমি ডিএফওর সঙ্গে এই নিয়ে কথাও বলেছি।” উল্লেখ্য, ভারত সরকারের সেন্ট্রাল জু অথরিটির বিচারে মিডিয়াম ক্যাটাগরির চিড়িয়াখানা হিসেবে দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে ঝাড়গ্রামের এই জুলজিক্যাল পার্ক। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে দেড় থেকে দু’কিমির মধ্যে ধবনি বিটে প্রায় তেইশ হেক্টর জমির উপর এক সুন্দর জঙ্গলঘেরা প্রকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত ঝাড়গ্রামের এই চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানার মূল আকর্ষণ হল মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। এক সময় বিভিন্ন জায়গায় থেকে উদ্ধার হওয়া হরিণ এনে রাখা হত ওই চিড়িয়াখানায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীদের স্থান হয়। রাজ্যে পালা বদলের পর এই চিড়িয়াখানার নাম হল ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’। শুরু হয় পূর্ণাঙ্গ চিড়িয়াখানা হিসেবে সম্প্রসারণের কাজ। বর্তমানে পশু হাসপাতাল থেকে শুরু করে উন্নতমানে প্রাণীদের থাকার এনক্লোজার তৈরি হয়েছে এখানে। রয়েছে ৩৩৯ টি বিভিন্ন প্রজাতির পশু, পাখি, সাপ। সজারু, হায়না, নেকড়ে, লেপার্ড, ভালুক, কচ্ছপ, ফিসিং ক্যাট, জঙ্গল ক্যাট, ময়ূর, ভালুক, নীল গাই, গোসাপ, কেইটে, গোখরো, চন্দ্রবোরা, পাইথন-সহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ রয়েছে এই চিড়িয়াখানায়।