বাম সরকারের একটা ভুল সিদ্ধান্তে শান্ত সিঙ্গুর বদলে গিয়েছিল আন্দোলনের অগ্নিভূমিতে। সরকার এবং টাটাদের হাত থেকে নিজেদের জমি অধিগ্রহণ বাঁচাতে কৃষকেরা জীবন বাজি রেখে একজোট হয়ে নেমেছিলেন আন্দলনে। সেই আন্দোলনের মুখ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরের লড়াইয়ের বার্তা কলকাতা-সহ গোটা দেশ, বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আন্দোলনে শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে স্মৃতিসৌধ তৈরির সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত শিলমোহর দিল রাজ্য। গত এপ্রিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই স্মৃতিসৌধের নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন।
সিঙ্গুর আন্দোলনে যে ১৪ জন মানুষ শহিদ হয়েছেন, তাঁদের স্মৃতিতেই এই সৌধ তৈরি হচ্ছে। স্মৃতিসৌধ তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকল পূর্ত দপ্তর। জানা গিয়েছে, ৩০০ দিনের মধ্যে এটি তৈরি করা হবে। মোট ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হবে স্মারকটি। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে সিঙ্গেরভেড়ি অঞ্চলে এক একর জমির ওপর সৌধ ঘিরে একটি পার্কও থাকবে। সৌধের উচ্চতা হবে ২৫ থেকে ৩০ ফুট। ১৫ ফুট মঞ্চের ওপর স্মৃতিসৌধটি থাকবে। আলো দিয়ে সাজানোও হবে সেটি। ভেতরে থাকবে বসার জায়গা। সূত্রের খবর, তিনটি মডেল আগেই পছন্দ করেছিলেন মমতা। এরমধ্যে একটি মডেল চূড়ান্ত হয়েছে।
৩৪ বছরের ‘ক্ষমতালোভী’ সরকারকে পদানত করে বাংলায় জন্ম নিয়েছিল ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হয়েই তিনি শপথ নিয়েছিলেন জমি ফিরিয়ে দেওয়ার।বহু লড়াইয়ের পর ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিল, সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ এবং নির্দেশ দিল অধিগৃহীত জমি কৃষকদর ফেরত দেওয়ার। কথা দিয়ে কথা রাখেন মমতা। কৃষকদের জমি ফেরত দেওয়াই হোক বা স্মৃতিসৌধ স্থাপন, তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালনে কখনও ব্যর্থ হন না।