পঞ্চমীর দিন কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন নন্দীগ্রামের মৃত জওয়ান বুদ্ধদেবের স্ত্রী রাখী পণ্ডা। তাই বাপ-মরা মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক ও মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মাদুর্গার আহ্বান লগ্নের এই শুভক্ষণে শুভেন্দু বলেন, ‘দেশের কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বুদ্ধদেব। তাঁর স্ত্রী ও শিশুকন্যার ভাত, কাপড়, পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠায় কোনও সমস্যা হবে না। সমস্ত দায়িত্ব আমার।’
লখনৌতে পোস্টিং ছিল নন্দীগ্রামের চিল্লাগ্রামের যুবক বছর ছাব্বিশের বুদ্ধদেব পণ্ডার। সেখানেই গত আগস্ট মাসের শেষদিকে কাপড় মেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তখন বুদ্ধদেবের স্ত্রী রাখী অন্তঃসত্ত্বা। বছর খানেক আগেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। সেই রাখী পঞ্চমীর দিন কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন। খবর পাওয়া মাত্র শুভেচ্ছা জানান মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তখনই জানিয়ে দেন, মৃত জওয়ানের সদ্যোজাতর যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন তিনি নিজে।
ষষ্ঠীর সকালেই এই খবর ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুভেন্দুর এমন মহানুভবতায় আপ্লুত রাজ্যবাসী। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বন্যা বয়ে গেছে এই তৃণমূল নেতাকে ঘিরে। পুজোর ঠিক আগেই তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরে কিছু রদবদল করেছিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই শুভেন্দুর কাঁধে কিছু বাড়তি দায়িত্ব চাপান মমতা। বুঝিয়ে দেন আগামী দিনে কারা হতে চলেছেন তৃণমূলের মুখ। মমতার সেই বাছাই যে কতটা যথার্থ ছিল, এদিনের ঘটনায় ‘অভিভাবক’ শুভেন্দু সেটাই প্রমাণ করলেন আরও একবার।
চিল্লাগ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, নন্দীগ্রাম আর শুভেন্দু অধিকারী সমার্থক। তিনিই এই জেলার অভিভাবক। নন্দীগ্রামের আন্দোলনের ঘটনায় শহিদ পরিবারদের দেখভাল করা থেকে দুঃস্থ-অভাবীদের জীবন চালানো হয়ে ইদ-দুর্গোৎসবের সময় গরিব, পিছিয়ে পড়া মানুষদের মুখে হাসি ফোটাতে মানুষকে সাহায্য করেন পিতৃস্নেহে। মাসদেড়েক আগে যখন বুদ্ধদেবের মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে ফেরে তখনই শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন শুভেন্দু। মৃত জওয়ানের ছবিতে মাল্যদান করে বুদ্ধদেবের পিতার হাতে ২ লক্ষ টাকা তুলে দেন। ছোট ছেলেকে চাকরির প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। মৃত জওয়ানের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা জেনে তখনই চিকিৎসা-সহ যাবতীয় দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেটাই এবার পালন করলেন।