দোরগোড়ায় লোকসভা ভোট। ভোটের আগমনী বার্তার সাথেসাথে জোটের গন্ধও বইছে দেশের রাজনীতিতে। বাদ নেই রাজ্যও। বিধাসভার মত লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেসের হাত ধরতে বঙ্গ সিপিএমের যে কোনও আপত্তি নেই, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছে আলিমুদ্দিন। তেমনই কংগ্রেসের মধ্যেও অনেকেই সিপিএমের সঙ্গে জোট চান। তবে কেউ কেউ এখনও একা চলার পক্ষপাতী, কেউ আবার মহাজোটের পক্ষে। তাই দলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে বৈঠক ডেকেছেন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী।
দুই সাংসদ মৌসম নুর ও আবু হাসেম খান চৌধুরি (ডালু)- কে নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনাও শুরু হয়েছে। অনেকেই চাইছেন, সোমবার প্রদেশের বৈঠকে এই দুই সাংসদই উপস্থিত থাকুন। জোট নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল মৌসম নুরকে। তাঁর বক্তব্য, ‘২০১৬- র বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে জোট করেছিল কংগ্রেস। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভাল নয়। ২০১৯- এ শুধু সিপিএমের সঙ্গে জোট করলে হবে না। এই জোটে আনতে হবে তৃণমূলকেও। তা না হলে বিজেপিকে হারানো যাবে না।’ ডালুবাবুও মৌসম নুরের বক্তব্যকে সমর্থনই করেছেন। সূত্র মারফত খবর, তিনি নাকতলায় এসে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জির বাড়িতে গিয়ে কথাও বলে এসেছেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূল কংগ্রেস ২০১৯- এর নির্বাচনে বাংলায় কারও সঙ্গে জোট করবে না। ৪২টি আসনেই প্রার্থী দেবে। এর মধ্যে ৩৪টি আসনে তৃণমূল গত নির্বাচনে জয়ী হয়। এবার তাদের লক্ষ্য ৪২-এ ৪২ করা। তবে বিজেপিকে হঠানোর জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে মহাজোট করতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে তিনি অনেকটাই এগিয়েছেন। বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
অধীরের বৈঠকে ডাকা হয়েছে সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি ওইদিন কী বলেন, সেটাই দেখার। ইতিমধ্যেই বিধায়কদের মধ্যে বেশ কয়েকজন দল ছেড়ে চলে গেছেন তৃণমূলে। অধীরের ডাকা বৈঠকে বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান আসবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে মান্নান সিপিএমের সঙ্গে জোট করতে আগ্রহী। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, আগ বাড়িয়ে এবার তিনি কিছু করবেন না। এ বিষয়ে যা করার, তা প্রদেশ সভাপতিই করবেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর মতামত শোনার অপেক্ষায় রয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। সোমেন মিত্র আগেই জানিয়েছেন, ‘সংখ্যা বাড়াতে গেলে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাওয়া যেতেই পারে। দলকে আগে শক্তিশালী করে পরবর্তী ক্ষেত্রে সিপিএমের সঙ্গেও যাওয়া যেতে পারে। তবে সবটাই নির্ভর করছে দিল্লির ওপর। ২০১৬- য় জোট নিয়ে আমি কোনও আপত্তি করিনি।’ বিধানসভার মত লোকসভা নির্বাচনেও ফের ‘হাত’-এ ‘কাস্তে-হাতুড়ি’ ওঠে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।