বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের কালচিনির জনসভায় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের পরই কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে একহাত নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানালেন, “দেশের বীর সন্তান, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথিকৃৎ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে মর্যাদা দেয়নি কেন্দ্র, বাংলাই তাঁকে সঠিক সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে। তাঁর তৈরি প্ল্যানিং কমিশনও তুলে দিয়েছে কেন্দ্র।” সেইসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশের জন্য এতকিছু করার পরও মানুষটা কোথায় উধাও হয়ে গেল সেটুকু পর্যন্ত আমরা জানতে পারলাম না! আমাদের রাজ্য সরকার নেতাজি-সংক্রান্ত ৬৪টি ফাইল সামনে এনেছে, যাতে মানুষ তাঁর সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এ-বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই।”
এদিন সভামঞ্চ থেকে নেতাজীর স্মৃতিচারণে করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশের এই হীরের টুকরো সন্তানকে নিয়ে শুধু রাজনীতিই করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি। নেতাজীর তৈরি নীতি আয়োগ বাতিল করেছে এই বিজেপি সরকার। নেতাজী দেশবাসীকে স্বাধীনতার শিক্ষা ও রাজনৈতিক দীক্ষা দিয়েছিলেন। নেতাজী আমাদের পথপ্রদর্শক, তিনি আমাদের চিন্তনে, মননে, তিনি আমাদের দেশনায়ক। স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের জন্য লড়াইয়ে যিনি সেনাবাহিনী তৈরি করেছিলেন তিনি আর কেউ নন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। আমরা যে ‘জয়হিন্দ’ স্লোগান তুলে দেশের গৌরবগাথা তুলে ধরি তা নেতাজীর লেখা।”

এখানেই থেমে থাকেননি তৃণমূল নেত্রী। “নেতাজীর আদর্শ ছিল সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলা। এই কারণেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে দেশনায়ক আখ্যা দিয়েছিলেন। আজকের দিনটিকে তাই আমরা দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করি। আজকের দিনে আমরা সকল দেশবরেণ্য স্বাধীনতা সংগ্রামীকে স্মরণ করছি। এই জেলার বক্সা দুর্গে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ছিলেন, তাই আজকে ডুয়ার্সে আমরা নেতাজীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান উদযাপন করছি। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তাঁর জন্মদিন জানি কিন্তু মৃত্যুদিন জানি না। নেতাজী চক্রন্তের শিকার। নিজের দেশের জন্য কত লড়াই করেছেন তিনি, অথচ কোথায় হারিয়ে গেলেন তিনি আমরা জানতেও পারলাম না। কিন্তু আমরা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁর অন্তর্ধান-সংক্রান্ত ৬৪টি ফাইল সকলের সামনে তুলে ধরেছি। আলিপুর জেলে যে কুঠুরিতে তিনি থাকতেন আমরা সেটিকে সংস্কার করে মানুষের দেখার জন্য খুলে দিয়েছি”, বক্তব্য মমতার।




