অসন্তোষের আগুন জ্বলছিলই। আর এবার তাতে যেন পড়ল ঘৃতাহুতি। লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অর্জুন সিং। প্রসঙ্গত, এর আগে পদ্মশিবিরে থাকাকালীনই বারাকপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভ ছিল। শুক্রবার দিল্লীর সদর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফের বিজেপিতে যোগদানের পর, নতুন করে সেই ক্ষোভের বহিপ্রকাশ ঘটল। বুধবারের পর ফের শনিবারও বারাকপুর স্টেশনে অর্জুনের বিরোধিতায় পোস্টার পড়তে দেখা গেল। পোস্টারে লেখা হয়েছে ‘ভাগ অর্জুন ভাগ’! বারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত বিজেপির ২৩টি মণ্ডল রয়েছে। প্রায় সবকটি মণ্ডলের নেতৃত্বই বুধবার রাত থেকে জেলা, রাজ্য নেতৃত্বদের কাছে অর্জুন বিরোধিতার কথা জানাতে শুরু করেছিল। বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য, তৃণমূল অর্জুন সিংকে প্রার্থী না করায় প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ তুলে তিনি দল ছাড়েন। এর থেকেই পরিষ্কার, তিনি বিজেপিতে টিকিট পাওয়ার জন্যই যোগ দিয়েছেন। অর্থাৎ, দলকে ভালবেসে নয়, ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই ফের দল বদলেছেন উনি।
এবিষয়ে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে উল্লেখযোগ্য যোগদান পর্ব রাজ্যে বিজেপি কার্যালয়েই হত। কিন্তু অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বিরোধিতা থাকার কারণেই তাঁকে যোগদানের জন্য দিল্লী উড়ে যেতে হল। ২০১৯ সালের লোকসভায় নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হওয়ার পর থেকেই অর্জুন-ঘনিষ্ঠরা সেটাকে ব্যক্তিগত কৃতিত্ব বলে বহুবার দাবি করেছিল। সেই কারণেই ফের তাঁকে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছে বলে দাবি ঘনিষ্ঠদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, বারাকপুর এলাকায় বিজেপির মুখ বলে কেউ নেই। অর্জুন সিং না থাকলে ২০১৯ সালেও বিজেপি বারাকপুর আসনটি জিততে পারত না। তাই ফের তাঁকে বিজেপিতে নেওয়া হল। সম্ভবত প্রার্থীও করা হবে। যদিও বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র জানিয়েছেন, “ব্যক্তি ক্যারিশ্মায় নয়, মানুষ ভোট দেবে মোদীজীর উন্নয়ন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য।” বিজেপির অন্দরমহলের এই অসন্তোষ প্রসঙ্গে খোঁচা দিতে ছাড়েননি তৃণমূল প্রার্থী তথা নৈহাটির বিধায়ক মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। “অন্য রাজনৈতিক দলের সম্পর্কে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে আমি বিশ্বাস করি, যারা দীর্ঘসময় ধরে একটা পার্টি করে, সেই লোকগুলোকেই দলের সম্মান জানানো উচিত। তাঁদেরই দায়িত্ব দেওয়া উচিত”, বক্তব্য তাঁর।