মঙ্গলবার উড়িষ্যায় করমণ্ডল দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করে সোজা মেদিনীপুরে পৌঁছন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিকেলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যান মমতা। আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের অসুবিধার কথা শোনেন। পাশাপাশি চিকিৎসকদের সঙ্গেও আলোচনা করেন। গত শুক্রবার করমণ্ডল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে একটি মেডিক্যাল দল বালেশ্বর গিয়েছিল। সেই চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বালেশ্বর দুর্ঘটনায় আহত ৪৬ জন। তাঁদের দেখতে বিকেলে ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ হাসপাতালে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। কোন রোগীর বাড়ি কোথায়, জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পর মমতা বলেন, ‘‘আহতদের মধ্যে ম্যাক্সিমামই (বেশির ভাগ) মেদিনীপুরের। বীরভূম এবং ঝাড়গ্রামও রয়েছে। আমি কটকে গিয়েও এমন রোগীদের সঙ্গে দেখা করে এলাম।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘অন্তত ৬১ জন ভর্তি এখানকার সব হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ জন বিহারের ভাইবোন। বুধবার থেকে মৃতদের পরিবারের এক জন সদস্যকে ডাকা হবে।” আহত এবং অল্প আহতদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় আহতদের নিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা থেকে জানা যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে মোট ২৭টি দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায়। এ ছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৮০ জন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৩৪ জন। আঘাত গুরুতর হওয়ায় অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে ৫ জনকে। অস্ত্রোপচার করা হয়েছে ২১ জনের। অন্যান্য রাজ্য থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১৫ জন। এখনও পশ্চিম মেদিনীপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৬ জন। তাঁদের খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার উড়িষ্যা গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে আহতদের দেখে বেরিয়ে মমতা জানান, এখনও ৯৭ জন ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মমতা ধন্যবাদ জানান হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। পাশাপাশি ওড়িশা সরকারকেও ধন্যবাদ জানান। এর পরেই সিবিআই তদন্ত নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘সত্য ধামাচাপা দেওয়া উচিত নয়।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই হাসপাতালে ১০০ শয্যার একটি ক্রিটিক্যাল ইউনিট তৈরি হবে। এছাড়া একটি ‘ক্যান্সার ব্লক’ও নির্মাণ করবে রাজ্য।