নির্বাচনের আবহেই শেয়ার বাজার নিয়ে ফের শোরগোলের সূত্রপাত হল রাজনীতিতে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর শেয়ার বাজার সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা। আর মোদীর পূর্বাভাসের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শেয়ারবাজার সর্বকালীন রেকর্ড স্পর্শ করল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা যায় প্রবলভাবে শেয়ারবাজার ঊর্ধমুখী। ৭৫ হাজার পয়েন্টের গন্ডি পেরিয়ে গেল সেনসেক্স। শেয়ারবাজার এবং অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিক মহলে প্রবল কৌতূহল তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত যেখানে লাগাতার শেয়ারবাজারে ধস নামছিল, সেই শেয়ারবাজার ঠিক প্রধানমন্ত্রীর ওই বিবৃতির পর এভাবে ঘুরে দাঁড়াল কোন জাদুবলে? উঠছে প্রশ্ন।
স্বভাবতই এত রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে বিরোধী শিবির। মোদী সোমবার বলেছিলেন যে, ৪ঠা জুন শেয়ারবাজার রেকর্ড করবে। সবাই যেন তৈরি থাকেন। কারণ তাঁর নেতৃত্বে সরকার আবার আসতে চলেছে, সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে ৪ঠা জুন ফলপ্রকাশের দিন। একজন প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ শেয়ারবাজারের পূর্বাভাস দিচ্ছেন কেন, এই নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ানোর পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও একধাপ সুর চড়িয়ে বলেছিলেন, “এখনই শেয়ার কিনে রাখুন। ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর কিন্তু বিপুল বাড়বে সব শেয়ারের দাম।” এদিকে, সরকারের দুই প্রধান কর্তা এভাবে সরাসরি শেয়ারবাজারে লগ্নি করার কথা ঘোষণা করায় অর্থনৈতিক মহলে গুঞ্জন তৈরি হয়। এভাবে প্রধানমন্ত্রী কোনও স্পেকুলেটিভ বাণিজ্যের পক্ষে কিছু পূর্বাভাস দিতে পারেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মঙ্গলবার কলকাতায় এসে এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অখিল স্বামী। তাঁর সাফ কথা, “দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতারা কি শেয়ার বাজারের দালাল? তা না হলে তাঁরা এমন মন্তব্য করবেন কেন? সাধারণ মানুষ তাঁদের কষ্টের রোজগারের টাকা শেয়ার বাজারে বা মিউচুয়াল ফান্ডে রাখেন ভালো রিটার্ন লাভের আশায়। ৪ জুনের পর যদি শেয়ার বাজারে ধস নামে, তাহলে তারা বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তার দায় কি নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ নেবেন?” পাশাপাশি , প্রধানমন্ত্রীর বাজার চাঙ্গা করার এই গ্যারান্টিও স্রেফ ‘জুমলা’, আরও এক ধাপ এগিয়ে এমনই জানিয়ে দিয়েছেন স্বামী।