অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো বিদেশি মালিকাধীন ই-কমার্স সংস্থাগুলির সঙ্গে গোপনে জোট বেঁধে দেশের ছোট ব্যবসায়ী ও দোকানগুলির সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করছে দেশের ব্যাঙ্কগুলি। যা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া-র আচরণবিধিকেও লঙ্ঘণ করে। এমনই অভিযোগ তুলে আজ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে চিঠি পাঠাল কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। তাঁদের আবেদন, অর্থমন্ত্রী যেন দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখেন এবং এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ব্যাঙ্ক ও ই-কমার্স কোম্পানিগুলির এ হেন গোপন আঁতাতের অভিযোগ কেন? দেশের প্রায় ৭ কোটি ছোট ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা সিএআইটি-র অভিযোগ, অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট মালিকানাধীন ফ্লিপকার্ট ও অন্য ই-কমার্স কম্পানিগুলির সঙ্গে গোপনে চুক্তি করছে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক। আর এই পক্ষপাতিত্বের শিকার দেশের ছোট ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি এই সমস্ত সাইটের কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক, ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট-সহ একাধিক অফার দিচ্ছে। যা শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স কম্পানিগুলির ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়াচ্ছে না, উল্টে দেশের ছোট ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করছে, তাঁদের ব্যবসা কমাচ্ছে।
এ বিষয়ে সিএআইটি-র ন্যাশনাল সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খান্ডেলওয়াল জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক ও ই-কমার্স কম্পানিগুলির এই জোট অনেক ক্ষেত্রেই অবৈধ ও বে-আইনি। এটি ভারতীয় সংবিধানের রাইট অফ ট্রেডকে লঙ্ঘণ করে। পাশপাশি কম্পিটিশন অ্যাক্ট ২০০২-কেও লঙ্ঘণ করে। এতে এই ই-মার্স কম্পানি ও ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে। এসবিআই, অ্যাক্সিস ও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের মতো দেশের বড় বড় ব্যাঙ্কগুলি ই-কমার্স সাইটগুলিকে একাধিক অফার দেয়। কিন্তু দেশের ছোট দোকানি বা ব্যবসায়ীদের অনলাইন পেমেন্ট মোডে সেই রকম কোনও সুবিধা দেয় না। তাদের বঞ্চিত করা হয়। ব্যাঙ্কগুলি কীসের ভিত্তিতে এই স্বেচ্ছাচার করছে, তার কোনও স্পষ্ট কারণ জানা যায়নি। এবং চিন্তার বিষয় হল, আরবিআই বা কোনও বিশেষজ্ঞ এই বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব দেননি।
চিঠিতে অর্থমন্ত্রীকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিল সিএআইটি। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স-এর প্রস্তাব ছিল, দেশে ই-কমার্স সংস্থাগুলির ব্যবসা খতিয়ে দেখতে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়ে তোলা হোক। আপাতত এক নতুন দিকে মোড় নিয়েছে সিএআইটি-র আবেদন। এ বার কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা সময়ের অপেক্ষা!