ইউহান নয়, করোনার জন্ম ভারতে! এবার এমনই দাবি করল চীনের একদল বিজ্ঞানী। যা শুনে রীতিমত অবাক গোটা বিশ্ব। এতদিনে করোনা ভাইরাসের ‘আঁতুরঘর’ হিসেবে চীনের ইউহান প্রদেশ গোটা বিশ্বে পরিচিত হয়ে গিয়েছে। যার ফলে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির উপর বেজায় খাপ্পা তারা। নিজেদের দায় এড়াতে কম প্রচেষ্টা করেনি জিনপিংয়ের দেশ। আর এবার করোনা সংক্রমণের জন্য সরাসরি ভারতকেই দায়ী করে বসল তারা। চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের বিজ্ঞানীদের দাবি, ইউহান নয়, ভারতের দূষিত জল থেকেই করোনা ছড়িয়েছে। মানুষ এবং প্রাণীদেহের সংক্রমণের মাধ্যমে তা দ্রুত গোটা বিশ্বে মহামারীর আকার ধারণ করেছে।
২০১৯ সালের নভেম্বরে চীনের ইউহানে প্রথম নভেল করোনা ভাইরাস চিহ্নিত হয়। কিন্তু চীনা বিজ্ঞানীদের দাবি, জীবাণুটির জন্ম আরও আগে- ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে এবং তার জন্মস্থল ভারত। এই দাবির স্বপক্ষে তাঁদের যুক্তি, প্রবল গ্রীষ্মে ভারত ও ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় জলকষ্ট দেখা দেয়। মানুষের সঙ্গে জলকষ্টে ভুগছিল প্রাণীরাও। সেসময় একে অন্যের সংস্পর্শে আসায় ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। শুধু তাইই নয়, ভারতের ‘দুর্বল’ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর জন্য ভাইরাসের ভয়াবহতা চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় গোটা বিশ্বে এতটা খারাপ পরিস্থিতি বলেও দাবি করেন চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রকৃতি সম্পর্কে পড়াশোনা করে বিজ্ঞানীরাই জানিয়েছিলেন, অতিরিক্ত গরমে কোভিড-১৯ একদমই বাঁচতে পারে না।
আচমকা ভারতকে এভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য দায়ী করে ফেলে চীনের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি তুলেছে ভারতের বন্ধু দেশগুলি। অনেকের মতে, লাদাখ সঙ্ঘর্ষে পিছু হঠার প্রতিশোধ স্বরূপ এখন জীবাণু নিয়ে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে জিনপিং বাহিনী। কিন্তু তাঁদের এমন দাবি যে ধোপেই টিকছে না, আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের প্রতিবাদই তা বুঝিয়ে দিচ্ছে। ব্রিটেনের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের মতে, গ্রীষ্মে ভারত থেকে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, অপ্রাসঙ্গিক। মারণ করোনা ভাইরাসের মূল কেন্দ্র কী, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি।
যদিও সর্বাধিক প্রচলিত ধারণা, ইউহানের বাজার, যেখানে মূলত সামুদ্রিক প্রাণীদের মাংস ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হয়, সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনা ভাইরাস। আবার আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশের অভিযোগ, ইউহানের ল্যাবরেটরিতে এই মারণ জীবাণু নিয়ে গবেষণা চলছিল। এক বিজ্ঞানীর শরীর থেকে তা ছড়িয়েছে। কারও আবার অভিযোগ, জীবাণু অস্ত্র তৈরির ষড়যন্ত্র ছিল চীনের।