কখনও ছেলের ক্যানসারের দোহাই দিয়ে, আবার কখনও বা প্রশান্ত কিশোরের টিমের লোক এই বলেই উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষ এমনকি নেতা-মন্ত্রীদের থেকেও টাকা আদায় করতেন ৫০ বছরের প্রৌঢ়। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ভুয়ো ফেসবুক প্রোফাইল বানিয়েও চলছিল টাকা তোলার কাজ। রমরম করে প্রতারণার ব্যবসা চলছিল গত বছর তিনেক ধরে। তবে আর শেষরক্ষা হলো না। অভিযুক্ত দীপেন্দু দত্তকে হাতেনাতে পাকড়াও করল পুলিশ।
প্রথম সন্দেহ হয়, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ভুয়ো সেই প্রোফাইল দেখেই। সংবাদমাধ্যমে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই প্রোফাইল দীপেন্দু বাবুর। এই প্রোফাইল দেখিয়ে নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর খাস লোক বলে পরিচয় দিয়ে ইদানীং বহু মানুষকে ঠকিয়েছিলেন তিনি।
জলপাইগুড়ির অরবিন্দ নগর এলাকার বাসিন্দা দীপেন্দু বাবু। পুলিশ জানিয়েছে, ছেলেকে সঙ্গী করেই এই লোক ঠকানোর কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। জেলার বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষ, তাঁর প্রতারণার জালে ফেঁসেছেন অনেকেই। ছেলের ক্যানসার বলে কখনও পাঁচ হাজার, কখনও সাত হাজার আবার কখনও দশ হাজার টাকা অবধি তুলেছেন।
এমনকি তাঁর কবল থেকে বাদ যায়নি প্রাক্তন বনমন্ত্রী বিনয় বর্মনও। জানা গেছে, মন্ত্রীর কাছে নিজেকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন দীপেন্দু বাবু। ছেলের ক্যানসারের বাহানা করে মন্ত্রীর কাছ থেকে তিনি মোটা টাকা আদায় করেছিলেন। শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতা নান্টু পাল, মদন ভট্টাচার্য প্রমুখ নেতাদের থেকেও নানা অছিলায় টাকা তুলেছিলেন দীপেন্দু বাবু।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপেন্দু দত্ত আগেও নানা কারণে পুলিশের নজরে পড়েছিলেন। জমি সংক্রান্ত ঝামেলা, প্রতারণা-সহ তাঁর নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায়। গ্রেফতারির হাত থেকে বাঁচতে তিন বছর আগে জলপাইগুড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশের দাবি, শিলিগুড়ির কোথাও গা ডাকা দিয়েছিলেন দীপেন্দু বাবু। ফিরে এসে ফের এই একই কাজ শুরু করেছেন তিনি। বর্তমানে তাঁকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।