স্বাধীনতা দিবসের আগেরদিনই বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে দলবদল করেছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদানের দিন থেকেই ‘ব্যক্তিগত’ জীবনে তোলপাড় শুরু হয়েছে শোভনের জীবনে। দিল্লীতে শোভনের যোগদানের দিনই বিজেপি অফিসে তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের উপস্থিতি নিয়ে যে ঝড়ের শুরু হয়েছিল, তা এখন দিনদিন যেন গতি বাড়াচ্ছে। আর তাতেই রাজনৈতিক জীবনে মনোনিবেশ করার থেকে ব্যক্তিগত ‘কাজকর্মেই’ বেশি মন লাগাতে হচ্ছে শোভনকে।
গতকাল রাতে যেন সেই নাটকেরই আকর্ষক এক মুহূর্ত তৈরি হল। রাত ১০টা নাগাদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সল্টলেকের বাড়িতে যান দেবশ্রী। রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক ও অভিনেত্রী দেবশ্রী পৌঁছনোর মিনিট চল্লিশ পর দিলীপ বাড়ি ফেরেন। ততক্ষণে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সেখানে পৌঁছে যান। তাই ফোনেই কথা হয় তাঁদের।
একদিকে যখন এই চিত্র, অন্যদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন দুই বঙ্গ নেতাকে নিয়ে পৌঁছন শোভনের বাড়িতে। সূত্রের খবর, শোভন ও তাঁর বর্তমান বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁরা বলেন, বিজেপিতে দেবশ্রীর যোগদানের বিষয়টিকে হালকাভাবে নিতে। কিন্তু তাঁদের সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে শোভন জানিয়ে দেন, দেবশ্রী বিজেপিতে যোগ দিলে দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। শোভনের এই একগুঁয়েমির নেপথ্যে অনেকেই অবশ্য বৈশাখীর হস্তক্ষেপ দেখছেন। আর পুরনো-নতুন বান্ধবী দ্বন্দ্বে জেরবার হচ্ছেন শোভন।
শুধু তাই নয়, বিজেপির বঙ্গ নেতাদের বিরুদ্ধেও অরবিন্দ মেননের কাছে একাধিক অভিযোগ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এমনকী সম্প্রতি বিজেপির রাজ্যস্তরের বৈঠকেও যোগ দেননি তিনি। আর তারপর থেকে গোটা পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে দুই নারী আর শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে যে জেরবার হচ্ছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির, তা স্পষ্ট।