সমস্যায় পড়েছেন? কেউ আপনাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছে? তাহলে ‘দিদিকে বলো’। গোটা বাংলা জুড়ে এটাই এখন মুশকিল আসানের নয়া মন্ত্র। অনিল কপূর অভিনীত ‘নায়ক’ সিনেমায় যেমন যে কোনও অভাব-অভিযোগ নিয়ে ফোন আসত একদিনের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। আর সেই ফোন পেয়েই অকুস্থলে ছুটে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতেন তিনি। সম্প্রতি সেই কায়দাতেই রাজ্যবাসীর নানা সমস্যার সমাধান করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও সরকারের কাজকর্ম নিয়ে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ ও মতামত জানাতে চালু হয়েছে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী। টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে এবং ই-মেল পাঠিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবার আরেক কদম এগিয়ে নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসকদের কাছে জরুরি বার্তা পাঠিয়ে বিভিন্ন সরকারি যোজনায় বিগত তিন বছরের উপভোক্তাদের ফোন নম্বর ও ঠিকানা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই তথ্য পাওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের পরামর্শদাতা ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিমের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করবেন। প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা তাঁরা ঠিকমতো পাচ্ছেন কিনা সে সম্পর্কে সরাসরি তাঁদের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
ওই সূত্রের দাবি, আগামী ২৬ অগস্টের মধ্যে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সমস্ত উপভোক্তাদের ফোন নম্বর পাঠাতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ‘বাংলার বাড়ি’ নামে চালায় রাজ্য সরকার। এবার প্রশান্ত কিশোরের টিমের সদস্যরা ওই প্রকল্পের প্রাপকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান। প্রকল্পের টাকা তারা ঠিকমতো পেয়েছেন কিনা ঘরের মান কেমন তা জানতে চাওয়া হবে। আবাসন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে প্রতি জেলায় তিন বছরে গড়ে ৪০ হাজার ঘর তৈরি হয়েছে। এই হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২৮ লক্ষ উপভোক্তার ফোন নম্বর মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জমা পড়ার কথা। ওই প্রকল্পে উপভোক্তাদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করবার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও যেসব প্রকল্পে উপভক্তারা সরাসরি অর্থ সাহায্য পাচ্ছেন তাঁদের ফোন নম্বর, ঠিকানা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। নবান্নের এক কর্তা জানান, ‘৩০ অাগস্টের মধ্যে সমব্যথী প্রকল্পের উপভোক্তাদের বিস্তারিত বিবরণ জানাতে বলা হয়েছে। গীতাঞ্জলি, বিধবাভাতা, বার্ধক্যভাতার উপভোক্তাদের বিষয়ে রাজ্য থেকে তাঁদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’ উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্দেশ আসার পর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জেলাগুলোতে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।
পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের জেলা পরিষদে উপভোক্তাদের ফোন নম্বর পাঠাতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, পঞ্চায়েতের কাজের সুফল কতটা নীচুতলায় পৌঁছেছে, তা জানতেই পিকের টিমের সদস্যরা উপভোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন।