রাত পোহালেই দেশজুড়ে শুরু হবে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের পর্ব। তার আগে বৃহস্পতিবার তমলুকে তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের হয়ে প্রচার করলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বিয়াল্লিশ আসনের মধ্যে যে কেন্দ্রগুলির লড়াই বিশেষ নজরে, তার মধ্যে অন্যতম অবশ্যই তমলুক। এখানকার তৃণমূল প্রার্থী দলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের সেনাপতি প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে মমতা বললেন, ”আগে দেবাংশুর সঙ্গে লড়ুন, তার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালাগালি করবেন। আমরা এখানে অন্য প্রার্থী দিইনি ইচ্ছে করি। ছাত্র-যুবরা, যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে দেবাংশু লড়বে এখানে।” বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের বিবাদ ছিল প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক। বিশেষত নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর রায় নিয়ে বরাবর আপত্তি তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। কখনও কখনও মুখ্যমন্ত্রীও তার সমালোচনা করেছেন। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন এবং তমলুক থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঘাসফুল শিবিরের যোদ্ধা তরুণ তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রচারেই তমলুকের মহিষাদলে নির্বাচনী জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখান থেকে বিজেপি প্রার্থীকে কড়া ভাষায় একহাত নিলেন তিনি।
মমতার স্পষ্ট বক্তব্য, “আর এখানকার বিজেপি প্রার্থী তো একেবারে মহানুভব প্রার্থী। ঈশ্বরের ঠিক পরেই নাকি আবার ঈশ্বরের উপরে? বিচারপতির আসনে বসে বিজেপির সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন, নিজেই বলেছেন। বিচারপতি হয়ে সবচেয়ে বেশি চাকরি খেয়েছেন। প্রার্থী হয়ে উনি ভাবছেন, এটাও বিচারালয়। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাইছেন। আরে আগে দেহত্যাগ করুন, লজ্জা ঢাকুন। কী বলব তাঁকে? আপনারা নাম বলবেন। তাঁকে বিতাড়িত করে দিন। আপনি বিচারব্যবস্থার কলঙ্ক। ছিলেন বিকাশরঞ্জনের জুনিয়র। এখন গদ্দারের সিনিয়র। আগে দেবাংশুর সঙ্গে লড়ুন, তার পর মমতাকে গালাগালি করবেন। আমরা এখানে অন্য প্রার্থী দিইনি ইচ্ছে করি। ছাত্র, যুবদের চাকরি খেয়েছেন, ছেড়ে দেব?” এর পর দেবাংশুর উদ্দেশে তিনি বলেন, ”দেবাংশুকে বলব, এই তমুলক থেকে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে সামনে এনে দুঃখের কথা বলো। মানুষের কথা বলো। ওদের সঙ্গে চলো।” তমলুকের মতো কঠিন আসন থেকে দেবাংশু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা নিয়েও নিজের মত জানান মমতা। ”১৯৮৪ সালে আমার খুব কম বয়স ছিল। তা সত্ত্বেও যাদবপুর থেকে দাঁড়িয়ে সিপিএমকে হারিয়ে জিতেছিলাম। তখন থেকেই ওরা আমাকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। দেবাংশুকেও তাই পাঠিয়েছি এখানে, এত কম বয়সে। এই বয়স থেকে ও রাজনীতিটা দায়িত্ব নিয়ে করুক”, জানান তৃণমূল সুপ্রিমো।