গতকাল বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে মানুষকে সচেতন করতে টুইট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তামাকমুক্ত সমাজ গড়তে উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা। পুরসভা নির্দেশ দিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে যেন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি না হয়।
‘একটা সিগারেট খাওয়া মানে মৃত্যুর জন্য ঝাঁপ দেওয়া, আত্মহত্যার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।’ কলকাতার মৌলালি যুবকেন্দ্রে তামাকবর্জন দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে এভাবেই বক্তব্য শুরু করেন মেয়র। বলেন, “আইন করে সাধারণ মানুষের সিগারেট-বিড়ি খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। যেভাবে জল নষ্ট করবেন না, জঞ্জাল ফেলবেন না, গাছ কাটবেন না বলে গণ-আন্দোলন হয়েছে সেভাবেই তামাকজাত পণ্য ব্যবহারও বন্ধ করতে হবে। মানুষকে আরও বেশিদিন বাঁচতে হবে বলেই সচেতন কর্মসূচিকে গণ-আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। পরিবারের স্বার্থে সবাইকে আরও বেশিদিন বাঁচতে হলে বিড়ি-সিগারেট ছাড়তেই হবে। প্রতিটি মানুষকে অন্য একজন ব্যক্তিকে বিড়ি-সিগারেটের নেশা ছাড়াতে হবে।”
মহানগরের সরকারি অফিস, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, আদালত এবং হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের ১০০ মিটারের মধ্যে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কলকাতা পুরসভা। পুরভবন থেকে শুরু করে সরকারি অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে বর্তমানে যে সমস্ত তামাকজাত পণ্য বিক্রির দোকান রয়েছে সেগুলি থেকে বিড়ি-সিগারেট-গুটখা সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তামাকবর্জন দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শুক্রবার ‘কটপা-২০০৩’ আইন কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
মৌলালি যুব কেন্দ্রে ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন ও নারায়ণ হৃদালয় হাসপাতালের যৌথ আয়োজনের সভায় বক্তব্য রাখছিলেন মেয়র। সেখানেই মেয়র বলেন, “তামাকজাত পণ্য আইন মেনে পুলিশকে শহরজুড়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিচ্ছি। সরকারি বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধের পাশাপাশি শহরের সমস্ত পুরস্কুলে শিশুদের দাঁতপরীক্ষায় বিশেষ কর্মসূচি চালুরও ঘোষণা করেন মেয়র। কলকাতার ২৬ হাজার স্কুল পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের কাছেও রাজ্য ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের ডাক্তাররা আগামী দু’মাসে পৌছবেন।
আইন বলবৎ করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে নজরদারির জন্য শহরের সমস্ত থানাকে সক্রিয় হতে শহরের পুলিশ কমিশনারকেও নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। দেখতে বলেছেন, “১৮ বছরের কম বয়সিরা যেন তামাকজাত পণ্য ক্রয় বা বিক্রয়ের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত না থাকে।” উল্লেখ্য ১৫ বছর আগে একবার এই আইন মেনে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি নিয়ে নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ফের খোদ পুরভবন বা হাসপাতাল চত্বরে চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নয়া মেয়র শহরে ক্যানসার আক্রান্তের হার কমাতে পুরনো আইন লাগু করতে চাইছেন কলকাতায়।