স্বামীকে হারানোর পরেও যুদ্ধ চান না শহীদ জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা সাঁতরা। তাঁর সাফ কথা, শান্তি ফিরুক। এমনকী বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইকের পরেও নিজের অবস্থানে অনড় মিতা। এটাই সহ্য হচ্ছে না তথাকথিত ‘দেশভক্ত’দের। তারা নেমে পড়েছে মিতার চরিত্রহননে। নোংরা ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে তাঁকে। তোলা হচ্ছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের নোংরা অভিযোগ। এমনকী বলা হচ্ছে, তিনি নাকি স্বামী বাবলুকে ভালোবাসতেন না।
তবে এমন কুৎসিত আক্রমণের মুখেও অটল মিতা। তিনি পাত্তা দিচ্ছেন না এসব সমালোচনাকে। বাউড়িয়ার একটি স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকার মতে, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে বলছেন, তাঁদের যেমন বলবার অধিকার আছে, তেমনই আমারও মত প্রকাশের অধিকার আছে’। মিতার কথায়, ‘একজন শিক্ষিকা ও একজন ইতিহাসের ছাত্রী হিসাবে জানি যুদ্ধ কোনও স্থায়ী সমাধান নয়। যুদ্ধে একজন স্ত্রী স্বামীকে হারান, একজন মা সন্তানকে, একজন শিশু বাবাকে হারায়। এতে কী লাভ?’
কিন্তু মিতার মত প্রকাশের অধিকারকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছে দেশভক্তেরা। তাঁরা সবাই মিলে নেমেছে কাদা ছোঁড়ার খেলায়। মিতাকে টেনে নামানো হচ্ছে পাঁকে। তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, বলা হচ্ছে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই এসব কথা বলছেন মিতা। এমনকী তিনি নাকি শহীদ বাবলু অর্থাৎ তাঁর স্বামীকে ভালোবাসেন না, তাই এমন যুদ্ধ বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশভক্তরা। সব মিলিয়ে চলছে বেলেল্লাপনা।
এত কিছুর পরেও মিতা তাঁর যুদ্ধ বিরোধী অবস্থানে অনড়। তাঁর কথায়, ‘আমার স্বামী সেনাতে ছিলেন। ভারতীয় বায়ুসেনা-সহ সকল বাহিনীর কৃতিত্বকে আমি স্যালুট জানাই। বায়ুসেনা মঙ্গলবার যা করেছে, তা সত্যিই অভিবাদন যোগ্য’। এরপরেও মিতার প্রশ্ন, ‘কিন্তু সার্বিকভাবে যুদ্ধ করে কী লাভ?’




