২০১৯-এর নির্বাচনের প্রথম ঘণ্টাটাই বাজিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার ব্রিগেডের মঞ্চে হাজির কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে অরুণাচল প্রদেশের প্রথম সারির বিরোধী নেতারা।
গোটা দেশকে চমক দিতেই ব্রিগেডের অতিথি বাছাই করেছেন মমতা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়া কিংবা শরদ পাওয়ারদের মত বর্ষীয়ান রাজনেতিক ব্যক্তিত্বদের পাশে হার্দিক প্যাটেল কিংবা জিগ্নেশ মেভানি হয়ত নিতান্তই নবীন। তবু মোদীকে বার্তা দিতে এদের মত অস্ত্রকে হাতছাড়া করেননি তৃণমূলনেত্রী। তাই সভার শুরুতেই বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হল হার্দিককে।
গুজরাতে বিজেপি সরকারকে রীতিমত চাপে ফেলে দিয়েছিলেন এই পাতিদার নেতা। পাতিদারদের সংরক্ষণের দাবিতে অনশনেও বসেছিলেন তিনি। বক্তব্যের শুরুতে মোদী সরকারকে চোর ও গুণ্ডা বলে সম্বোধন করে হার্দিক বলেন, ‘দেশকে বাঁচাতে একজোট হওয়ার সময় এসেছে। সুভাষচন্দ্র বসু ইংরেজদের সঙ্গে লড়েছিলেন, আমাদের সবাইকে চোরদের সঙ্গে লড়তে হবে।’
হার্দিকের পরই এদিন মহাজোটের দ্বিতীয় মুখ ছিলেন জিগ্নেশ মেভানি। দলিতদের জন্য লড়াই করে শিরোনামে থাকা জিগ্নেশ বর্তমানে গুজরাতের বিধায়কও। বাংলায় এসে এদিন তিনি বলেন, ‘আজ এই মঞ্চে বিরোধীরা সবাই একজোট হয়েছে একটাই বার্তা দিতে। আমাদের দেশ ভারতে আজ ঘোর দুর্দিন। দলিত, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ শোষিত। প্রতি মুহূর্তে সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। অবিজেপি জোট ক্ষমতায় এলে কৃষকের আত্মহত্যা রুখবে। বেকারদের কর্মসংস্থান হবে’।
অরুণাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং, আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট করার প্রচেষ্টায় ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। অবিজেপি দলগুলিকে একত্রিত হয়ে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারকে উৎখাত করার ডাক দেন অরুণাচল প্রদেশের ৫ বারের মুখ্যমন্ত্রী। মিজোরামের জোরাম ন্যাশনাল পার্টির নেতা লালডুহোমা বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত দাবানলের মতো জ্বলছে। যার জন্য দায়ী নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের খসড়া। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার মানুষের খাওয়া-পরা সবকিছুর উপর নজরদারি চালাচ্ছে। দেশে একটা অসিহষ্ণু পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতির বদল ঘটানোর উদ্দেশ্যেই এই ঐতিহাসিক জমায়েত।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের ‘অপশাসন, দুর্নীতি এবং গণতান্ত্রিক কাঠামো অকেজো করে দেওয়ার বিরুদ্ধে সকাল থেকেই একের পর এক নেতা সরব হয়েছেন। ২০১৯-এ নতুন সরকার গড়ার, ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার ডাক দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একমঞ্চে বিরোধীদের সামিল করতে পেরেছেন তার প্রশংসা করেন নেতারা।
![গুজরাটে মোদীর 'শত্রু' হার্দিক-জিগ্নেশকে দিয়েই ব্রিগেড শুরু মমতার](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2019/01/dca32b74-fed3-41c7-a19b-d8e03cbee2b3.jpg)