ক্ষমতায় এসেই বাংলার সার্বিক উন্নয়নের দিকে তীক্ষ্ণ নজর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার মধ্যে অন্যতম ছিল কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান৷ মমতার হাত ধরেই ব্যাপক উন্নতি হয়েছে কৃষিশিল্পের৷ ৩১ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকবন্ধু প্রকল্প ঘোষণা করেন৷ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পেতে চলেছেন লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভাগ চাষি। বীরভূম জেলার প্রায় তিন লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পে অর্থসাহায্য পাবেন৷
বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে কৃষিদফতরের জারি করা একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চলতি রবি মরশুমের জন্য ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই অর্থসাহায্য দেওয়া শুরু হবে। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার এই বিশাল প্রকল্পের আর্থিক লেনদেনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের সিংহভাগ কৃষক পরিবার সমবায় ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত হবে। পাশাপাশি বিরাট অঙ্কের আর্থিক লেনদেনে যুক্ত থাকায় সমবায় ব্যবস্থা আরও মজবুত হবে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দাবি।
১৬ জানুয়ারি রাজ্যের অর্থ দফতরও প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ায় চাষিদের টাকা পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা যত দ্রুত সম্ভব, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করব”। ইতিমধ্যেই প্রকল্প চালু করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে৷
প্রকল্প অনুযায়ী, কৃষিকাজের জন্য খরিফ ও রবি বা বোরো চাষের সময় মোট দু’বার রাজ্য সরকার ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভাগ চাষিদের জমির পরিমাণ অনুযায়ী ন্যূনতম এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থসাহায্য দেবে। খরিফ চাষের ক্ষেত্রে জুন মাসে ও রবি বা বোরো চাষের ক্ষেত্রে নভেম্বর মাসে এই সাহায্য দেওয়া হবে। কিন্তু, কৃষকদের অর্থসাহায্য করার জন্য জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নারাজ রাজ্য সরকার। তাই চলতি রবি মরশুমের অর্থসাহায্য ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রকল্পটি চালু হলে ১৮ থেকে ৬০ বছরের কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য পাবে তাঁর পরিবার। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় চাষিদের চিহ্নিতকরণ করছে কৃষিদফতর৷
এই প্রকল্পে একদিকে কৃষকরা যেমন উপকৃত হবেন, অন্যদিকে এর সঙ্গে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে যুক্ত করে তাদের আরও শক্তিশালী করতে চাইছে রাজ্য সরকার। কৃষিদফতরের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ চাষী এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হতে পারেন৷ রাজ্যের কান্ডারী হিসাবে মমতাই যে সেরা, তাঁর যে কোনদিকে নজর রাখতে বিন্দুমাত্র গাফিলতি হয় না এই ঘটনা তা আবার প্রমাণ করল৷