গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর একটি ঐতিহাসিক রায়ে সমস্ত মহিলাদের জন্য শবরীমালা মন্দিরের দরজা খুলে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সমস্ত বয়সের মহিলারা সুযোগ পেয়েছিলেন মন্দিরে প্রবেশ করার৷ তারপর কার্যত নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করে গত ২ জানুয়ারি শবরীমালার আায়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন ৩৯ বছরের কনক। সঙ্গে ছিলেন ৪০ বছরের বিন্দু আম্মিনিও। মন্দির থেকে বেরিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের রোষানলের হাত থেকে বাঁচতে প্রাণে বাঁচতে লুকিয়েও ছিলেন গোপন আস্তানায়। কিন্তু, বিপর্যয় এড়াতে পারলেন না কনক দুর্গা। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত হলেন। শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশের ১৩ দিন পর বাড়ি ফিরতেই কনক দুর্গার উপর হামলা করেন তাঁর শাশুড়ি। তাঁর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। বাড়ির বাইরে পুলিশ প্রহরা থাকা সত্ত্বেও বিপত্তি এড়াতে পারেননি কনক। আপাতত গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে পেরিনথলমন্নায় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মন্দির থেকে বেরিয়ে কনক দুর্গা বলেছিলেন, “আমার বিপদ হতে পারে জানি। তা সত্ত্বেও মন্দিরের ভিতর ঢুকতে চেয়েছিলাম। আমাদের এটা ভেবেই গর্ববোধ হচ্ছে যে অন্য মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশের পথটা আমরা সহজ করে দিলাম। এটা শুধুমাত্র ভক্তির বিষয় নয়, সমস্ত লিঙ্গের মানুষের সমান অধিকারেরও বিষয়”। এর পর থেকেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। প্রাণসংশয়ের হতে পারে, এই আশঙ্কায় লুকিয়ে ছিলেন কোচির অদূরে একটি গোপন আস্তানায়। প্রায় দু’সপ্তাহ পর পুলিশি প্রহরায় নিজের বাড়িতে পা রেখেছিলেন তিনি। বাড়ির বাইরে আট জন পুলিশকর্মীর প্রহরাও ছিল তাঁর সুরক্ষায়। তবে লিঙ্গসাম্যের দাবিতে ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানবপ্রাচীরের প্রতিবাদ সত্ত্বেও কেরলের অন্দরের ছবিটা যে এতটুকুও বদলায়নি তা কনকের উপরে হামলার ঘটনাতেই আবারও পরিষ্কার হল।