নতুন বছরের শুরুতেই শবরীমালায় ইতিহাস তৈরি করলেন দুই নারী। কয়েক দশকের প্রাচীন প্রথা ভেঙে অবশেষে শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করলেন ৫০ অনূর্ধ্ব দুই মহিলা। এদিন ভোরে পুলিশের সাহায্যেই মন্দিরের ভেতর প্রবেশ করেন ওই দুজন। তবে শুধু প্রবেশই নয়, ভগবান আয়াপ্পার মূর্তির সামনে পুজোও দিলেন তাঁরা।
জানা গেছে, ওই দুই মহিলার নাম বিন্দু এবং কনকদুর্গা৷ মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাম্বা বেস ক্যাম্প থেকে পাহাড়ে ওঠা শুরু করেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে অল্প কয়েক জন নিরপত্তারক্ষী। অবশেষে ভোর পৌনে চারটে নাগাদ মূল মন্দিরে প্রবেশ করেন ও পুজো দেন তাঁরা।
ঋতুমতী অবস্থায় পুজো দিলে আয়াপ্পা ক্রুদ্ধ হবেন, এই কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করেই কয়েক দশক ধরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স অবধি কোনও নারীর প্রবেশাধিকার ছিল না এই মন্দিরে। গত সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে বলে ভক্তদের মধ্যে লিঙ্গবৈষম্য করা যাবে না। যে কোনও বয়সের মহিলাকেই প্রবেশাধিকার দিতে হবে শবরীমালা মন্দিরে।
কিন্তু সেই রায়ের পরই তা ঘিরে শুরু হয় অশান্তি৷ কট্টরপন্থীদের বিক্ষোভের আঁচে পড়ে কেরল। যার জেরে ২৪শে ডিসেম্বর শবরীমালায় যেতে গিয়ে বাঁধা পান জনা ছয়েক মহিলা৷ আয়াপ্পার পূজারীদের বিপুল বিক্ষোভেই তাঁদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে আজ দুই মহিলা সফল হতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় শবরীমালা মন্দিরের দরজা। জানা গেছে, ঋতুমতি মহিলাদের প্রবেশের পর ‘শুদ্ধিকরণ’-এর জন্যই মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বুকে বল পেয়ে এই দুই মহিলা এর আগেও মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তখন বাধা পাওয়ায় তাঁদেরও ফিরে আসতে হয় বাকি মহিলাদের মতোই। তবে সেইবার খালি হাতে ফিরলেও এবার কিন্তু আয়াপ্পা দর্শন করেই ফিরলেন তাঁরা। যদিও আয়াপ্পা ধর্ম সেনার নেতা রাহুল ঈশ্বর বলেন, গোটা ব্যাপারটাই খুব সন্তর্পণে হয়েছে, আমাদের জানা থাকলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতাম।