রাজনীতির ময়দানে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এবার ফুলের বাগানেও মোদীকে ছাপিয়ে এগিয়ে গেলেন মমতা। জানা গেছে, এবছর মমতা এগিয়ে রয়েছেন মোদীর থেকেও।
তবে রাজনীতির ময়দানে যতই দ্বন্দ-দ্বৈরথ থাকুক না কেন, রাজারহাটে কিন্তু শান্তিপূর্ণ ভাবেই সহাবস্থান করছেন এই দুই নেতা-নেত্রীই। কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে তা নিয়ে চিন্তিত নয় কেউই। তাঁদের পাশাপাশি আছেন জ্যোতিবাবু ও নেহরুও। তবে জ্যোতিবাবুর দর কমে যেতেও কিন্তু কোনও হেলদোল নেই নেহরুর। মিলেমিশে দিব্যিই আছেন তাঁরা। নামমাহাত্যেই বিক্রি হগে যাচ্ছে এই মাঠভরা গোলাপ।
তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেই নয়; ভিনরাজ্যে মায় বিদেশের বাজারও ইদানীং ছেয়ে যাচ্ছে এই মমতা, মোদী, জ্যোতিবাবু এবিং নেহেরু গোলাপে। রাজারহাট পঞ্চায়েতের শিখরপুর, ঝালিগাছি, নয়াবাদ অঞ্চলের শ’দুয়েক চাষি বংশপরম্পরায় ফুটিয়ে যাচ্ছেন এইসব গোলাপ।
তা রাজনৈতিক নেতৃবর্গ নামে গোলাপের নামকরণ কেন? জানা গেছে, লাল টুকটুকে আধফোটা গোলাপের নাম নেহরুর নামে রাখা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে উত্তর নয়াবাদের এক কৃষক জানিয়েছেন, ‘পকেটের পিন হোলে জওহরলাল নেহরু এই ধরনের গোলাপ রাখতেন। সে গুলো অবশ্য কাশ্মীর থেকে আসত। ছবিতে তা দেখে আমাদের কোনও পূর্ব পুরুষ এই ধরনের গোলাপের নাম নেহেরু রেখে দেন। এখনও সেটাই চলছে।
আর জ্যোতিবাবু? বড় আকারের লাল রঙের গোলাপটির চলতি নাম তাঁর নামেই। চলতি ভাষায় তাঁর পার্টি সিপিএমকে লাল পার্টি বলা হয়। সেই লাল অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গিয়েছে জ্যোতি নামের সঙ্গেও। ফলে রাজারহাটের রক্তবর্ণের গোলাপটি যেন তাঁর নামেরই ঐতিহ্য বহন করছে। আবার গেরুয়া ঘেঁষা কমলা রঙের গোলাপটির নাম দেওয়া হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নামে। ২০১৩তে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই মোদীর নামের ভূষণ পেয়েছে কমলা গোলাপ।
আর বাগানের সব থেকে উজ্জ্বল ও ধবধবে সাদা গোলাপ যেটি, যার গায়ে হালকা নীলের ছিটে। এবছর সেই গোলাপটির চাহিদাই আকাশছোঁয়া। এবং সেই গোলাপটিই এখন লোকমুখে মমতা গোলাপ নামে পরিচিত। নীল পাড়ের সাদা জমির শাড়িটি এখন আইকনিক। দেশ তাে বটেই মায় বিদেশেও এই উপমা উত্থাপিত হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসে। বছর ছয়েক হল ওই গোলাপটির এমন নামকরণ হয়েছে। জানা গেছে, গত দু’বছর ধরেই এই ফুলটির মারাত্মক চাহিদা। যা পিছনে ফেলে দিয়েছে মোদী গোলাপকেও।
রাজারহাটে নয় নয় করে প্রায় দুশো থেকে সোয়া দুশো কৃষক এই ফুল চাষে যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের কাছে কাজ করেন আরও হাজার চারেক শ্রমিক। এঁদের সকলের মুখেই এখন হাসি ফুটিয়েছেন মমতা নামী গোলাপ।