প্রথম থেকেই বোঝা যাচ্ছিল বেশ জমিয়ে ঠাণ্ডা পড়তে চলেছে এবার।আর ঠিক সেই কথাই সত্যি হল। জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছে উত্তরবঙ্গে। শুধু তাই নয়, জাঁকিয়ে শীত পড়েছে দার্জিলিঙেও। পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও, কলকাতা সহ অন্যান্য জেলাতেও ইতিমধ্যেই অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ। গত দু’দিনে দু’ডিগ্রি কমে গিয়ে শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গিয়ে দাঁড়ায় ১৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ঠাণ্ডা এখনই পড়বে না বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গেছে। সামুদ্রিক হাওয়া ঢুকলে বরং সোমবার থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। দফতর অধিকর্তা গণেশ দাস বলেছেন, ‘ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় কলকাতায় ঠাণ্ডা পড়বে। ততদিন থাকবে হাল্কা ঠাণ্ডার আমেজ।’
সান্দাকফুর তাপমাত্রা নেমে গেছে হিমাঙ্কের নীচে। শুক্রবার রাতে তাপমাত্রা ছিল -৪ ডিগ্রি। দিনের বেলাতেই জমে যাচ্ছে জল। তবে এখনও তুষারপাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই জানা গেছে। দার্জিলিঙে দিনের বেলাতেও রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে গা গরম করে নিতে হচ্ছে। দার্জিলিঙের টাইগার হিলের প্যাভিলিয়ন ম্যানেজার প্রদীপ লামা জানান, ‘মনে হচ্ছে এখানে তাপমাত্রা প্রায় ২°।’ যদিও আবহাওয়া দফতর সূত্রে পরে জানা যায়, সেখানে তাপমাত্রা ছিল উষ্ণতা ৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও এদিন সকালে প্রায় ১৩০০ পর্যটক সূর্যোদয় দেখেন। দার্জিলিং শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪.৮ ডিগ্রি। রিনচেন লামা নামে এক প্রবীণ জানান, ‘এই সময়ে এত ঠান্ডা বহুদিন পর অনুভব করছি।’ পাহাড়ে তো এদিন পথে পথে আগুন জ্বালিয়ে শরীর সেঁকতে দেখা গেছে।’ এদিন কালিম্পঙে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৫ ডিগ্রি, শিলিগুড়িতে ১১.৭, উত্তর দিনাজপুরে ১৭.০, জলপাইগুড়িতে ১৩.৯, কোচবিহারে ১২.৪, মালদায় ১৭.৬ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ১৭.০ ডিগ্রি ছিল বলে জানা গেছে। ঠান্ডায় সন্ধের পর থেকেই শিলিগুড়ি সহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় লোকজন কমতে থাকে। হাড় হিম করা ঠাণ্ডা পড়েছে উত্তরবঙ্গের সমতলেও। গরম পোশাক ছাড়া সকাল ও বিকেলে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ছে। প্রথমে প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। এখন কুয়াশা হালকা হলেও ঠান্ডা একটুও কমেনি। বরং বাড়ছেই।
সুত্রের খবর পানাগড় ও পুরুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে যথাক্রমে ১৩.৮ এবং ১৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতে সর্বনিম্ন পারদ ঘোরাফেরা করেছে ১৭ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। ঘূর্ণিঝড় গজ-এর প্রভাব কাটতেই পূর্বাভাষ মতই রাজ্যে ঢুকতে শুরু করেছে উত্তুরে হাওয়া। তবে পুরোপুরি ঠাণ্ডার আমেজ পেতে রাজ্যবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আরও বেশ কিছুদিন৷