স্নেহের কাননকে বহুবার সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েকবার বকুনির পাশাপাশি দিয়েছিলেন অনেক সুযোগও। কিন্তু সেসব উপেক্ষা করেই প্রেমে অন্ধ হয়ে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এখন মেয়র পদ হারানোও সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু এত কিছুর পরে যৎসামান্যও বিচলিত নন তিনি। তাঁর ‘দুঃখ’ কেবল একটাই, ‘প্রিয় বান্ধবী’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর জন্য নানা ভাবে অসম্মানিত হতে হচ্ছে সকলের কাছে।
বান্ধবী বৈশাখীর সঙ্গে সম্পর্ক এবং তার জেরে সরকারি কাজে অবহেলা, স্ত্রী এবং পরিবারের সঙ্গে বিবাদ, দলকে বিড়ম্বনায় ফেলা ইত্যাদি কারণে দীর্ঘদিন ধরেই দলনেত্রী মমতার বিরাগভাজন হচ্ছিলেন শোভন। তাঁকে বারবার সতর্ক করার পরেও তিনি শোধরাননি বলেই অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার যখন ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি, তা সঙ্গে সঙ্গে গৃহীত হয়। খবর, মেয়র পদেও দ্রুত নতুন মুখ আনা হচ্ছে।
এরইমধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় এক বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবারও শোভন তাঁর প্রিয় বান্ধবী বৈশাখীর প্রতি অটুট আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তাঁর ‘দুর্দিনে’ বৈশাখীই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। যা তিনি কোনও মূল্যেই অস্বীকার করতে পারেন না। বর্তমানে বিভিন্ন মহলে বৈশাখীর নাম নিয়ে যে ভাবে চর্চা চলছে, শোভন তাতে বড়ই ব্যথিত।
এমনকি হঠাতই নানা পারিবারিক কেচ্ছার গল্প খাড়া করে সাফাইও গেয়েছেন শোভন। স্ত্রী রত্নার সঙ্গে এখন তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। শোভনের দাবি, রত্না তাঁকে জন্মদিনে বিষ মেশানো কেক খাওয়ানোর চক্রান্ত করেছিলেন। এমনকি চক্রান্ত করা হয়েছিল, সুপারি কিলার দিয়ে বৈশাখী ও তাঁর মেয়েকে মারার। নিজের স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ দিন শোভন অন্য এক ব্যক্তির নামও প্রকাশ্যে আনেন। যদিও এমন অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই বলেই মনে করছেন সকলে।
শোভনের অভিযোগের জবাবে রত্না বলেছেন, ‘শোভনের জন্মদিনের ওই কেক আমার ছেলে-মেয়েও খেয়েছে। এবং সুস্থ আছে।’ বৈশাখী ও তাঁর মেয়েকে মারতে চাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে রত্নার জবাব, ‘ওঁদের মারতে যাব কেন? ওঁরা এমনিতেই মৃত। বৈশাখীই বরং আমাকে খুনের চক্রান্ত করেছিলেন। পর্ণশ্রী থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েও রেখেছি।’