বাংলার স্কুলশিক্ষায় কোনও লিঙ্গবৈষম্য নেই। সকলের জন্য শিক্ষাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে শেষ কথা। সম্প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের রিপোর্টেই প্রকাশ পেয়েছে এই তথ্য।
অন্যান্য রাজ্যের অবস্থা কিন্তু ভয়াবহ। বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্য এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাটেও স্কুল শিক্ষায় লিঙ্গবৈষম্য ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। কম খরচে অথবা বিনামূল্যে সরকারি ব্যবস্থায় পড়ানো হচ্ছে কন্যাসন্তানদের। কারণ এই বিনিয়োগে লাভ নেই। ঠিক উল্টো কারণে শিক্ষাখাতে ছেলেদের জন্য বেশি অর্থ বরাদ্দ করছে পরিবারগুলি। দেশের বেশিরভাগ রাজ্যে যখন এই চিত্র, তখন উল্টোটাই ঘটছে বাংলায়।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক প্রকাশ করেছে শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্যাবলি বা এডুকেশন স্ট্যাটিটিক্স অ্যাট এ গ্লান্স। সেখানেই গুজরাট-রাজস্থানকে দশ গোল দিয়েছে বাংলা। কীভাবে সম্ভব হল? শিক্ষামহলের একাংশের মতে, কন্যাসন্তানদের অন্তত পক্ষে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়ানো এবং বাল্যবিবাহ রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর মতো প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে বাংলা। এই প্রকল্পগুলি একদিকে যেমন ছাত্রীদের স্কুলছুট কমানোর কাজে বড় ভূমিকা নিয়েছে, ঠিক তেমনই মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করানোর মাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। কমেছে বাল্যবিবাহের প্রবণতাও।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের সামাজিক কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা করা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরিজিতা দত্তর কথায়, ‘স্কুল শিক্ষায় বাংলার এই সাফল্যে অনুঘটকের কাজ করেছে কন্যাশ্রী’। মডার্ন হাইস্কুলের অধ্যক্ষা দময়ন্তী মুখোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘ঐতিহাসিক ভাবেই বাংলার শিক্ষা দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে এগিয়ে। তবে এ রাজ্যে বেসরকারি স্কুলগুলিতে বহু অবাঙালি পরিবারের মেয়েরাও পড়ছে। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যের প্রয়োজন নেই’।