‘সাধারণ মানুষ ভুগছে। টাকা, ভুয়ো খবর, মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতেও তাঁদের আর টলানো যাবে না। ২০১৯-এই পরিবর্তন হবে কেন্দ্রে’। এভাবেই বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের সুর বাঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বার্তা দিলেন পরিবর্তনের। আজ শুক্রবার, একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যম ‘রাইজিং বেঙ্গল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেখানেই এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজের সকল স্তরের বিশিষ্ট মানুষেরা। তাঁদের প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন তৃণমূল নেত্রী। নোটবন্দী থেকে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী, লোকসভা ভোট থেকে বিরোধী জোট এমনকি আঞ্চলিক দলগুলির ভবিষ্যৎ, বাদ দেননি কিছুই। কোথায় সমস্যা, কী তার সমাধান, কোন পথে বাংলা এগোবে, তার রূপরেখাও তৈরি করলেন সকলের সঙ্গে বসেই।
অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘বিজেপি শুধু রাজনৈতিক প্রচার চালায়। ওরা দেশের উন্নয়নের জন্য টাকা খরচ করবে না। এই নোটবন্দির সিদ্ধান্তটাই তার একটা বড় উদাহরণ। এখন ৯৯ শতাংশ বাতিল টাকাই ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছে। এটার কি দরকার ছিল? কালো টাকা সাদা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল’। প্রশ্ন তোলেন, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পে কজন টাকা পেয়েছেন? বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প কেন্দ্রের বরাদ্দ ১০০ কোটি৷ আর প্রকল্পের প্রচারেই খরচ ৮০ কোটি’৷
আঞ্চলিক দলগুলি আগামী লোকসভা নির্বাচনে নির্ণায়কের ভূমিকা নেবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘২০১৯ লোকসভা ভোটে আঞ্চলিক দলগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। একসময় মানুষের মনে আশঙ্কা ছিল আঞ্চলিক দলগুলি এক হলেও সরকার টিকে থাকবে কিনা কিংবা আদৌ কোনও কাজ হবে কিনা। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। বেশীর ভাগ আঞ্চলিক দল জোট বেধে কাজ করছ। তাই আগামী লোকসভা ভোটে ফেডেরাল ফ্রন্ট তৈরির জন্য অনেক দল একত্রিত হয়েছে। কে প্রধানমন্ত্রী হবে সেটা পরে ঠিক হবে।যৌথ নেতৃত্বে কাজ করবে সকলে’।
জাতীয়তাবাদ এবং আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নিয়ে বিজেপি-কে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘আমরা বিজেপির থেকে বেশী দেশভক্ত। যে ৪০ লাখ নাম নাগরিকপঞ্জীতে বাদ পড়েছে তার মধ্যে ২২ লাখ হিন্দু। আমাদের কি বিজেপি-র কাছ থেকে হিন্দু হওয়ার সার্টিফিকেট পেতে হবে? এই দেশটা মানুষের শরীরের মত, কোনও অঙ্গ বাদ গেলে সারা দেহ বাঁচতে পারবে না। আমরা এরকম বিভেদমূলক মতাদর্শে বিশ্বাস করি না।’
এসবের মাঝে কিছুটা মজাও করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসময় তিনি মঞ্চে বক্তব্য পেশ করছেন। প্রশ্ন করার জন্য এগিয়ে আসেন পি সি সরকার জুনিয়ার। পি সি সরকার প্রশ্নের আগেই, মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ, ‘২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভ্যানিশ করে দিন তো’। অবশ্য এই কাজটা মমতা শুরু করে দিলেন এদিনের মঞ্চ থেকেই।