কেরালার এই বন্যা বিপর্যয় কেন? দক্ষিণ ভারতের শবরীমালা মন্দিরে মহিলারা ঢুকছেন তাই ক্ষুব্ধ ভগবান আইয়াপ্পা। তাঁর রোষের কারণেই ভেসে গেছে কেরালা।
এমনই অদ্ভুত যুক্তি দিয়ে এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টিকে সরলীকরণ করেছেন আরএসএস ঘনিষ্ঠ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্ণর এস গুরুমূর্তি। একটি টুইট রিটুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘কেরালার বন্যার সঙ্গে শবরীমালার যোগ রয়েছে কিনা সেটা বিচারপতিরা ভেবে দেখতে পারেন। বন্যার দশ লক্ষ কারণের মধ্যে একটি কারণও যদি এটা হয়, মানুষ কিন্তু চাইবে না শবরীমালা মামলার রায় আইয়াপ্পার বিরুদ্ধে যাক’।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাধারন মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুরুমূর্তির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিজেপি-ও অস্বস্তিতে। এখনও পর্যন্ত গুরুমূর্তির এই বক্তব্যের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও মন্তব্য করেননি বিজেপি-র মহিলা নেত্রীরা। প্রশ্ন উঠেছে, গুজরাটের ভূমিকম্প তাহলে কার রোষে হয়েছিল?
অবশ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে ঈশ্বরের রোষ খোঁজার এমন প্রবণতা নতুন নয়। ১৯৩৪ সালে বিহার-নেপালে ভূমিকম্পের পর স্বয়ং গান্ধীজিও এমন মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, হরিজনদের প্রতি অস্পৃশ্যতার কারণেই ভূমিকম্প। সেই নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি।
সাধারণ কেউ নয়, আরএসএস ঘনিষ্ঠ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টরের মুখে এমন কথায় শাসক শিবিরও বিব্রত। গুরুমূর্তিকে প্রবল ভৎর্সনা করে সুপ্রিম কোর্টে শবরীমালা মামলার অন্যতম আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেন, ‘মানুষকে ধর্মের নামে ক্ষেপাচ্ছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টকে হুমকি দিচ্ছেন। তাঁর উচিৎ সংবিধান পড়া। বিজ্ঞানমনস্কতা আসলে মৌলিক দায়িত্ব’। চাপের মুখে কিছুটা পিছু হটে গুরুমূর্তির সাফাই, ‘আমি শুধু বিশ্বাসের কথা বলেছি’।
প্রসঙ্গত, কেরালার শবরীমালা মন্দিরে দশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সী মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা তোলার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে।