সোমবার সকালে কলকাতা ময়দানে পালিত হলো গোষ্ঠ পালের ১২৩ তম জন্মদিন। খেলোয়াড়, কর্মকর্তারা ছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোষ্ঠ পালের পরিবারের সদস্যরাও। তাঁর মর্মর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত ব্যক্তিরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রয়াত গোষ্ঠ পালের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন।
খেলোয়াড় থাকাকালীনই কিংবদন্তীর মর্যাদা পান গোষ্ঠ পাল। ভূষিত হয়েছিলেন ‘চীনের প্রাচীর’ অভিধায়। মাত্র এগারো বছর বয়সে কুমোরটুলি দলের হয়ে ফুটবল জীবন শুরু করেন তিনি। অল্প দিনের মধ্যেই ডাক পান মোহনবাগানে। তবে অনেকেই জানেন না মোহনবাগান দলের হয়েই চুটিয়ে ক্রিকেটও খেলতেন গোষ্ঠ পাল।
১৯২৮ সালে ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের ম্যাচ। মাঠে আসতে দেরী হয় গোষ্ঠ পালের। তাই ধুতি পরেই মাঠে নেমে পরেছিলেন তিনি। নির্বিঘ্নে খেলা শুরুও হয়। কিন্তু বল হাতে আগুন ছোটাতে থাকেন তিনি। চার বলের মধ্যে ২ টো উইকেট তুলে নিতেই বিপক্ষের চক্ষু চড়কগাছ। তাঁরা আম্পায়ারের কাছে আপত্তি জানালেন, নেটিভ কাপড় পরে খেলা যাবে না। খেলতে হলে পায়জামা পরতে হবে। কিন্তু এতে রাজি হয় না মোহনবাগান। ব্যস, ঝগড়া। শেষে বন্ধই হয়ে যায় ম্যাচ। এই ঘটনার পর থেকে আর ৬ বছর মুখোমুখি হয়নি এই দুই দল।
শুধু খেলার মাঠে ইতিহাস তৈরি করা নয়, জীবন দর্শনেও তিনি ছিলেন এমনই স্বাধীনতা সংগ্রামী। ১৯২৪ সালে ভারতীয় জাতীয় দলেরও অধিনায়কত্ব পান গোষ্ঠ পাল। ১৯৩৫ সালে ফুটবলকে বিদায় জানান তিনি।প্রথম ভারতীয় ফুটবলার তাঁকে পদ্মশ্রী খেতাবে ভুষিত করা হয়।
একবার গোষ্ঠ পালের মা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘কী এমন করেছিস তুই যে পুলিশ তোকে চেনে?’ গোষ্ঠ পাল হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘কিস্যু না…শুধু বলে লাথি’।