সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরেও তাঁকে নিয়ে সিপিএম-এর অন্দরে টানাপোড়েন অব্যাহত। বহিষ্কৃত সাংসদকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে নাকি চুপচাপ থাকবে দল? সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না কিছুতেই। সোমনাথবাবুর মৃত্যুর পরেই একেজি ভবন থেকে বিবৃতি পাঠের বহর দেখেই এমন সন্দেহ দানা বেঁধেছিল রাজ্যবাসীর মনে। সেই বিবৃতিতে সোমনাথবাবু দশ বারের সাংসদ বলা হলেও উল্লেখ করা হয়নি তাঁর দলের নাম। সেই সময়েই রাজ্যবাসীর একাংশ প্রশ্ন তুলেছিল, কিসের সংশয় সিপিএমের? রাজ্যের নেতারাই বা কেন খোলাখুলি এই বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারছেন না?
পরিবারের আপত্তিতে শেষযাত্রায় সোমনাথবাবুর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়নি আলিমুদিনে। এমনকি, শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে তাঁর বাড়ি গেলেও সেই অভিজ্ঞতা সুখের হয়নি বাম নেতৃত্বের পক্ষে। ক্ষুব্ধ সোমনাথবাবুর ছেলে কার্যত তাড়িয়ে দেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমদের। এতকিছুর পরেও বহিষ্কৃত সাংসাদকে কিভাবে শ্রদ্ধা জানানো হবে তা নিয়ে বিবাদ বেধেছে দলের অন্দরেই।
কারাত অ্যান্ড কোম্পানিকে চটানোর ক্ষমতা নেই আলিমুদ্দিনের।
তাই আগামী ২৩ আগস্ট দলের তরফে বহিষ্কৃত সাংসদের স্মরণসভার আয়োজন করা হলেও সামনে আসছে না সিপিএম। নামও থাকছে না তাঁদের। যাদবপুর সিটিজেনস ফোরামের উদ্যোগে পবিত্র সরকার, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যদের পৌরহিত্যে ২৩ আগস্ট সুকান্ত সেতুতে প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু নেপথ্য থেকে সিটিজেনস ফোরামের এই স্মরণসভা পরিচালনা করছেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক লাহিড়ীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্মরণসভার আমন্ত্রণপত্রও পোস্ট করেছেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। অর্থাৎ, সাপ মরলেও লাঠি যাতে না মচকায় সেজন্য সিটিজেন্স ফোরামের কাঁধেই বন্দুক রেখেছে দল।
জানা গেছে, ২৩ আগস্টের স্মরণসভা ‘নিরপেক্ষ’ রাখতে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সেদিন প্রথম সারির কয়েকজন বাম নেতাও উপস্থিত থাকবেন কথা আছে।
দিল্লির বাম নেতৃত্বের কাছে আলিমুদ্দিন যে নেহাতই ঠুঁটো জগন্নাথ, সোমনাথের স্মরণসভার আয়োজনে সেটাই প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার।