জোয়াও আর মিগুয়েল। ফুটফুটে দুটো বাচ্চা। দুই ভাই। একজনের বয়স ৬ বছর। অন্যজন এগারো মাসের। এই ছোট্ট দুটো বাচ্চাই বিরল রোগে আক্রান্ত। ‘স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাটরফি’। চিকিৎসার খরচ শুনলে চোট কপালে উঠবে। ৮ লাখ ২৭ হাজার ৩২ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ৭ কোটি ৩০ লাখ ২৮ হাজার টাকা)! কোথা থেকে পাবেন এত টাকা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন যখন বাচ্চা দুটোর বাবা–মা, তখন জোয়াও আর মিগুয়েলের জীবনে সান্তাক্লস হয়ে এলেন রবার্তো ফিরমিনো! দেখালেন, জনপ্রিয় হলেও, নিজেকে হারিয়ে ফেলতে নেই। মনুষ্যত্ব হারাতে নেই।
ব্রাজিলের এই দুই শিশুর চিকিৎসার জন্য ৫৯ হাজার ১৩২ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ৫২ লাখ ২১ হাজার ৪৩০ টাকা) কম পড়েছিল! তার মধ্যে ৫৯ হাজার পাউন্ডই (ভারতীয় মুদ্রায় ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৮০ টাকা) দিলেন ফিরমিনো! জোয়া আর মিগুয়েলের বাবা–মা আমোরিম এবং শেলেমের কৃতজ্ঞ এই দানে। শেলেমের বলেছেন, ‘ফিরমিনো আর ওঁর স্ত্রী ল্যারিসা পেরেইরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তারপর যা বললেন, তা আমার অশান্ত মনকে শান্ত করল। ওই মুহূর্তে এবং তারওপরে খুব কেঁদেছি। কারণ, এমন একটা মুহূর্তের জন্যই আমরা অপেক্ষায় ছিলাম।’ ফিরমিনো নিজে এই বিরাট অঙ্কের দান নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। প্রচার চান না বলেই।
তবে তাঁর স্ত্রী পেরেইরা ‘গ্লোবো’–কে জানিয়েছেন, ‘বাচ্চা দুটোর কথা শুনে চুপ করে বসে থাকতে পারিনি আমরা। কী করে থাকতাম? আমরাও তো মা–বাবা। তাই এই বাচ্চা দুটোর বাবা–মায়ের যন্ত্রণা অনুভব করতে পেরেছি। রবার্তো বরাবরই অন্যের কষ্ট বোঝে। তাই জোয়াও আর মিগুয়েলকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে। ও মন থেকে এটা চেয়েছে। আশা করি, ও অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।’ শেষে পেরেইরা আরও যোগ করেন, ‘তবে একটা কথা জেনে খুব খারাপ লাগছে। আমাদের দেশ এরকম অসুস্থ দুটো বাচ্চার জীবন বাঁচানোর জন্য ওষুধ জোগায় না! জঘন্য ব্যাপার।’
(সংগৃহীত)