পাখির চোখ ১৯’শের ভোট। সেই লক্ষ্যে শনিবার একুশে জুলাইয়ের ধর্মতলার জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী দিশা দেন, সেদিকে নজর গোটা দেশের। একইসঙ্গে দলীয় কর্মীদের নজর থাকবে রাজ্য রাজনীতি, সাংগঠনকে আরো মজবুত করত দলনেত্রীর বার্তার দিকে।
স্বভাবতই এই বিশাল জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। পুলিশি ব্যবস্থা ছাড়াও সমাবেশে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের বাছাই করা শ’চারেক বেগুনি রঙের পাঞ্জাবি পরা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী মোতায়েন থাকবে। সমাবেশে যোগ দিতে দূরের জেলাগুলি থেকে শহরে ভিড় জমিয়েছেন মানুষ। তাদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে একাধিক শিবিরে।
যাঁকে কেন্দ্র করে আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হতে চলেছে, সেই তৃণমূল নেত্রী যে সভার প্রধান বক্তা, তাকে ঘিরে জাতীয় স্তরে কৌতূহল থাকাটাই প্রত্যাশিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধী জেহাদের যে ডাক নোটবাতিল পর্বে মমতা দিয়েছিলেন, তা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক মহলের মত, মমতার এবারের শহিদ তর্পণের ব্যাপ্তি জাতীয় পরিসরে। অন্যদিকে, পঞ্চায়েত ভোটের বিজয় সমাবেশও এবারের ‘ধর্মতলা চলো’-র বিশেষ আকর্ষণ। তাই অতীতের সব ভিড়ের রেকর্ড এবার ম্লান হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আগেভাগে তা বুঝতে পেরেই বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
মূল মঞ্চের লোহার খুঁটির সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় আগত মানুষের আসা-যাওয়ার পথ প্রশস্ত করা ও মূল মঞ্চের পিছনের অংশ আরও মজবুত করতে বলেছে পূর্ত দপ্তর। প্রায় ভিড়ে মিশে কোনও দুষ্কৃতী যাতে সভামঞ্চের ধারকাছে ঘেঁষতে না পারে, সেদিকে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিস। নিরাপত্তার জন্য সভার দিন মঞ্চের নীচেও থাকবে সিসি ক্যামেরা। মঞ্চ ঘিরে থাকছে ২৫টি সিসিটিভি। সুরক্ষার কারণে মূল মঞ্চ গতবারের তুলনায় আট ফুট পিছিয়ে দেওয়া হয়ছে। নজরদারিতে থাকবে সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যরাও।
মূল মঞ্চ চারভাগে বিভক্ত। সবার উঁচুতে থাকবে প্রতিবারের মতো দলনেত্রীর ভাষণের মঞ্চ। তার পেছনের তিনটি স্তরে বাকিদের বসার জায়গা। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাবে ছয় হাজার পুলিশ কর্মী। ৩২ টি ক্যাম্প অফিসের পাসাপাশি ১৮টি পয়েন্টে থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স। ১০টি ড্রপ গেট, ৮টি জায়ান্ট স্ক্রিন, ৮টি মোবাইল অ্যাড্রেস সিস্টেমও থাকবে সমাবেশকে কেন্দ্র করে।
শনিবার সকাল থেকেই মধ্য কলকাতায় যান চলাচল নিয়ন্ত্র করবে পুলিশ। থাকবে কুইক রেসপন্স টিম, ব্যাকপ্যাক, ৪০টি জায়গায় থাকবে পুলিশ পিকেট। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ কুকুর ও অ্যান্টি সাবোতেজ ফোর্সও।