তিনি রাজনীতি করেন। তবে রাজনীতির আগে স্থান দেন মানবিকতাকে। বিভিন্ন সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায় মানুষের উন্নয়নের কথা। তা যে কেবল মুখের কথা নয় তার আবারও প্রমাণ পাওয়া গেল মেদিনীপুরে।
প্রধানমন্ত্রীর সভায় শামিয়ানা ভেঙে দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে গিয়ে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এতেই ব্যাকফুটে বিজেপি।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে জখমদের দেখে মমতার আশ্বাস গুরুতর আহত পাঁচ জনকে এক লক্ষ করে ও আরও চার জনকে দেওয়া হবে পঞ্চাস হাজার করে। নার্সিংহোম থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আহতরা বেশিরভাগই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। আহত পাঁচ জনকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। একজন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছিলেন। তিনি কলকাতায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর পরিবারকেও ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সভায় যারা আহত হয়েছেন তাঁরা ছাড়াও আরও ২০০ জন রোগীকে আমি দেখেছি। হাসপাতালের উন্নয়নের বিষয়ে সুপারের কথা বলেছি। প্রয়োজনের তুলনায় হাসপাতালে কম চিকিৎসক রয়েছে। তার জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।”
দুর্ঘটনার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়েছিলেন, আহতদের চিকিৎসার জন্য সবরকম সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।
তৃণমূল সুপ্রিমোর কৌশলী পদক্ষেপে বেশ বেকায়দায় বিজেপি। ১৬ই জুলাই মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানেই শামিয়ানা ভেঙে ঘটে দুর্ঘটনা। আহতদের দেখতে হাসপাতালে গেলেও ঘটনার ঠিক পরই ভাষণ চালিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সেই আচরণে কটাক্ষ উড়ে আসে বিভিন্ন মহল থেকে। ঘটনার পর কয়েকদিন দিন কেটে গেলেও হাসপাতালে যেতে সময় পাননি রাজ্য বিজেপির নেতারা। উল্টে হাসপাতালে ভর্তি আহতদের মুখে হাহাকার শোনা গেলেও দিলীপ ঘোষরা ব্যস্ত ছিলেন দুর্ঘটনার দায় নিয়ে দলের অন্দরে ‘আমরা-ওরায়’। কিন্তু নজর এড়ায়নি মুখ্যমন্ত্রীর। দেখেননি আহতরা কোন দলের কর্মী, সমর্থক। পৌঁছে গিয়েছেন অসহায় মানুষগুলির সহায়তায়। কথা বলেছেন তাঁদর সঙ্গে। নেত্রীকে দেখে কিছুটা স্বস্তিতে হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে থাকা মানুষগুলো।
উপায় না দেখে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ঘোষণার বাস্তবায়ণ হলে ভালো লাগবে’। কিন্তু কালো টাকা ফেরানো, স্বচ্ছ ভারত গঠন সহ বিজেপির ভুরিভুরি প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ণ হয়েছে তো? দিলীপ তখন ‘স্পিকটি নট’।
তবে বিজেপি যাই বলুক না কেন, মোদীর সভায় আহতদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে কৌশলে বাজিমাত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবারও বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর জনপ্রিয়তার আসল রহস্য।