গ্রন্থকীটেদের জন্য চরম দুঃসংবাদ। কলকাতায় ন্যাশানাল লাইব্রেরি বন্ধ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
‘ন্যাশানাল ভার্চুয়াল লাইব্রেরি ওফ ইন্ডিয়া’র তৈরির কথা বলছেন মোদী সরকার । তাই কোপ পড়তে চলেছে বছরের প্রাচীন ন্যাশানাল লাইব্রেরির উপর। ২০১৬ সালের ১৪ই জুন রাজধানীতে সচিব পর্যায়ের বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই বৈঠকে ঠিক হয়, ন্যাশানাল লাইব্রেরির যাবতীয় নথি দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে। ২০১৭ সালের ২৮শে জুন সরকারের তরফে ঠিক হয়, দিল্লির জনপথে ন্যাশানাল মিশন লাইব্রেরিতে বসবে ‘ভার্চুয়াল লাইব্রেরি’।
ন্যাশানাল লাইব্রেরির অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল অরুণ কুমার চক্রবর্তী বলেন, “প্রথমের দিকে ন্যাশানাল লাইব্রেরির বইগুলির ডিজিটাইজড ভার্সান রাখা হবে ভার্চুয়াল লাইব্রেরিতে। পরিকাঠামোর অভাবে এখনই থাকবে না মূল বইয়ের পান্ডুলিপি।“ ন্যাশানাল লাইব্রেরির স্থানান্তর প্রসঙ্গে অরুণবাবু বলেন, “ এর ফলে লাইব্রেরিতে আরও বেশি প্রকাশনার বই রাখা যাবে। পাঠকদের বই পেতেও সুবিধা হবে। বহু ভিন দেশের পাঠক নানান ধরনের বই পড়তে পারবেন। “
তবে এই যুক্তিতে আমল দিতে নারাজ কলকাতার বইপ্রেমীরা। তাঁদের মতে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শুধুই চমক। এতে প্রবল ক্ষতি একমাত্র বইপ্রেমীদেরই। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখর কলকাতা।
পড়ুয়াদের তরফে ন্যাশানাল লাইব্রেরির বহু দুষ্প্রাপ্য নথিও নষ্ট করারও অভিযোগ কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের বিরুদ্ধে । লাইব্রেরির বিদেশী ভাষা বিভাগও বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ । সেগুলি চালু করতে বলা হলেও কর্তৃপক্ষ আমল দেন না বলে দাবি বইপ্রেমীদের । বইপ্রেমীদের কটাক্ষ, দেশবাসী শিক্ষিত হয়ে উঠলে মোদীর বিভাজনের রাজনীতির আসল উদ্দেশ্য ধরা পড়ে যাবে । তাই মানুষকে অন্ধকারে রেখে দেওয়াই মোদীর একমাত্র লক্ষ্য ।
দীর্ঘ সময়ধরেই অবহেলার শিকার দেশের ঐতিহ্য ন্যাশানাল লাইব্রেরি । বইয়ের নামের চিরকুট জমা দিলেও তা মেলেনা । দিনের পর দিন নথি আসেনা লাইব্রেরিতে । ফলে অসুবিধে হয় গবেষণায় । ক্রমশ কমছে লাইব্রেরির কর্মী সংখ্যা । কর্মী অভাবে বই রক্ষণাবেক্ষণে অসুবিধে হচ্ছে । এইসব বিষয়ে লিখিতভাবেব কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও সুরাহাহয়নি বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের ।
বাংলা বিরোধী বহু কর্মকাণ্ডের নায়ক নরেন্দ্র মোদী । দেশের ঐতিহ্য, আবেগ তাঁর কাছে কোন গুরুত্ব বহন করে না । সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁর আমলে নানা পদক্ষেপের নজির রয়েছে । সেই তালিকায় নবতম সংযোজন কলকাতায় ন্যাশানাল লাইব্রেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত ।