নেতাজি ইন্ডোরে দলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক ডেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, দলের সামনে লক্ষ্য এখন একটাই। লোকসভা ভোট। যত বেশি সম্ভব আসন জিততে হবে।
তার পর সপ্তাহ ঘুরল না। কৃষ্ণনগরে দলীয় সভা থেকে লোকসভার লড়াইয়ের শুভ মহরত করে দিলেন পরিবহণ ও পরিবেশ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। জানিয়ে দিলেন, উনিশের পরীক্ষায় একশোয় একশো পেতে হবে তৃণমূলকে। তাঁর কথায়, “উনিশ সালে লোকসভা ভোটের পর জাতীয় রাজনীতির রাশ থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। কেন্দ্রের সরকারের নিয়ন্ত্রক শক্তি হয়ে উঠবেন দিদি। সুতরাং, তৃণমূলের লক্ষ্য হবে রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা আসনের ৪২টিই জিতে আসা।”
কদিন আগে কৃষ্ণনগরে জেলা শাসকের দফতরের সামনে বিজেপি-র বড় সভা করেছিলেন মুকুল রায়। ওই একই জায়গায় তৃণমূলের পাল্টা সভা করার জন্য তৃণমূল নেত্রী দায়িত্ব দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে।
দেখা গেল আড়ে-বহরে ভিড় দশ গোল দিল বিজেপি-র সভাকে। অথচ সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে কৃষ্ণনগর। বেলা আড়াইটের সময় শুভেন্দু যখন সভাস্থলে পৌঁছন তখনও নাগাড়ে বৃষ্টি পড়ছে। তবু উতসাহে ভাঁটা পড়েনি তৃণমূল কর্মীদের।
দলের কর্মী সমর্থকদের ভোকাল টনিক দিয়ে এই আবহেই বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন শুভেন্দু। বলেন, উন্নয়নের রথে চড়ে তৃণমূল জিতবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার উন্নয়নের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পালন করে দেখিয়েছে। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সেই রেকর্ড নেই। তা ছাড়া যে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় থেকেও মুখ্যমন্ত্রী ও উপ মুখ্যমন্ত্রীর এলাকায় লোকসভা আসনে জিততে পারেন না, তারা বাংলায় দাঁতও ফোটাতে পারবে না।
৪২টি আসন জেতার লক্ষ্যে, ব্যক্তিগত ভাবেও এ দিন অঙ্গীকার করেন পরিবহণ ও পরিবেশ মন্ত্রী। তাঁর কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার ৪২ টি আসনের মধ্যে ৮টি আসন এখন তৃণমূলের দখলে নেই। এর মধ্যে ৬ টি আসনে দলকে জেতানোর জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখব না।” ওই ছ’টি আসনের মধ্যে, মুর্শিদাবাদের তিনটি, মালদহের দুটি এবং রায়গঞ্জ লোকসভা আসন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে এ বার পঞ্চায়েত ভোটেও বিপুল সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। তা ছাড়া বিরোধী দল ভেঙে তৃণমূলে বিধায়ক সামিল করানোর ঘটনাও লাগাতার চলছে। এ দিনের সভা মঞ্চ থেকেই শুভেন্দু ঘোষণা করেন, ২ জুলাই মুর্শিদাবাদে বিরোধী শিবিরের আরও তিন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেবেন।
৪২টি আসন জিততে পারলে প্রধানমন্ত্রীত্বের অন্যতম দাবিদার হবেন মমতা, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।