বিশ্বকাপের গত কয়েক আসরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অংশ নেওয়া দল গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়েছে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ২০০২ সালে গ্রুপপর্ব থেকে বাড়ির পথ ধরে। একইভাবে ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়ন ইতালি ২০১০ বিশ্বকাপে এবং ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের ২০১৪ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে বিদায়ঘণ্টা বাজে। সেই অবস্থায় পড়তে যাচ্ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানিও।
এবারের বিশ্বকাপটা হার দিয়ে শুরু করে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে ১-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয় জোয়াকিম লো শিষ্যরা। দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল জার্মানির জন্য টুর্নামেন্টে টিকে থাকার। সুইডেনের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি প্রায় ড্রতেই নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দারুণ এক গোল করে দলকে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট এনে দেন টনি ক্রুস। ওই এক জয়ে বিশ্বকাপে টিকে যায় জার্মানরা। তবে বিশ্বকাপে টিকে থাকলেও দ্বিতীয় রাউন্ড এখনো নিশ্চিত হয়নি ক্রুস, ওজিলদের। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াই তাদের। এই ম্যাচ জিতলেই দ্বিতীয় নকআউটপর্ব নিশ্চিত হবে। হেরে গেলে গ্রুপের অন্য ম্যাচের ফলের ওপর বিশ্বকাপে টিকে থাকা নির্ভর করবে।
জার্মানি এবার ‘এফ’ গ্রুপ থেকে বিশ্বকাপে খেলছে। এই গ্রুপে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে মেক্সিকো। এরপর ৩ পয়েন্ট জার্মানি এবং সুইডেনের। গ্রুপের চতুর্থ দল কোরিয়ার অর্জন শূন্য। টানা দুই ম্যাচ জিতেও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে পারেনি মেক্সিকানরা। কারণ শেষ ম্যাচে যদি সুইডেন মেক্সিকোকে হারিয়ে দেয় এবং জার্মানি যদি কোরিয়াকে হারায়, তা হলে মেক্সিকো, জার্মানি এবং সুইডেন তিন দলের পয়েন্ট হবে সমান ৬। সে ক্ষেত্রে হেড টু হেড এবং গোলগড়ে এগিয়ে থাকা দল দুটি পাবে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট।
আর মেক্সিকো যদি ড্র করে, তা হলে অনায়াসেই চলে যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। একই সঙ্গে হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নও। জার্মানি যদি কোরিয়ার সঙ্গে ড্র করে এবং সুইডেন যদি মেক্সিকোকে হারিয়ে দেয়, তা হলে বাদ পড়ে যাবে জার্মানি। আর জার্মানি-সুইডেন দুদলই যদি তাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে ড্র করে; সে ক্ষেত্রে হেড টু হেড বিবেচনায় দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট পাবে।
টানা দুই ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার ক্ষীণ সুযোগ থাকছে কোরিয়ার! যদি মেক্সিকো সুইডেনকে হারায় এবং কোরিয়া যদি বড় ব্যবধানে জার্মানিকে, তা হলে সুইডেন, জার্মানি এবং কোরিয়ার পয়েন্ট হবে সমান। সে ক্ষেত্রে গোলগড়ে এগিয়ে থাকলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ থাকছে কোরিয়ারও!
কী করলে কী হতে পারে সেসব নিয়ে ভাবছেন না জার্মান কোচ জোয়াকিম। তার সমস্ত ভাবনাজুড়ে কোরিয়া ম্যাচ। ম্যাচটি জিততেই হবে এবং তা বড় ব্যবধানে সেই হিসাব কষেই দলকে তৈরি করছেন। কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে থাকছেন না জার্মানির নির্ভরতার প্রতীক জেরেম বোয়েটাং। সুইডেনের বিপক্ষের ম্যাচে লালকার্ডের শাস্তি পেয়েছিলেন তিনি। ইনজুরির কারণে জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচ খেলা হচ্ছে না কোরিয়ার অধিনায়ক কি সুঙ ইয়ংয়ের।