প্রতিবেদন : পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুকের গ্রেফতারিতে হস্তক্ষেপের আবেদন করে ও অবিলম্বে তাঁর মুক্তির আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছেন তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি আংমো। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী, লাদাখের উপরাজ্যপাল ও লাদাখ পুলিশের কাছেও পাঠানো হয়েছে আবেদনপত্র। এক সপ্তাহ ধরে জেলবন্দি সোনম। এবার তাঁর জামিনের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন গীতাঞ্জলি।
জানা গিয়েছে, গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। গ্রেফতারির নির্দেশের কোনও কপিও দেওয়া হয়নি গীতাঞ্জলিকে। সমস্ত বিষয়গুলি শীর্ষ আদালতের কাছে জানিয়ে গীতাঞ্জলির আবেদন, অবিলম্বে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হোক সোনমকে। বিগত ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই লাদাখের ষষ্ঠ তফসিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন লাদাখবাসীরা। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ আন্তর্জাতিক পুরস্কার জয়ী সোনম। আগাগোড়া তাঁদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই যা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। প্রাণ যায় চারজনের। আহতের সংখ্যা আশির বেশি।

এরপরই জাতীয় সুরক্ষা আইনে গ্রেফতার করে যোধপুরের জেলে নিয়ে যাওয়া হয় সোনমকে। আগেই দীর্ঘ দুই সপ্তাহ অনশনে থাকা সোনমের শারীরিক অবস্থাও একেবারেই ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে গীতাঞ্জলির অভিযোগ, আটক করার পর থেকে সোনমের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। পৈতৃক ভিটে থেকে এককাপড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। দীর্ঘ অনশনের পর অসুস্থ সোনমের আদৌ কোনও চিকিৎসা হচ্ছে কিনা, সেই সম্পর্কেও কোনও তথ্য নেই তাঁদের কাছে।
এমতাবস্থায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদৈ-সহ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী, লাদাখের উপরাজ্যপাল ও লাদাখ পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন গীতাঞ্জলি। অবিলম্বে যেন সোনমকে মুক্তি দেওয়া হয়, আর্জি তাঁর। তবে যোধপুর জেলে সোনম কেমন রয়েছেন, কিছুই জানা যায়নি। তাই স্বামীর দ্রুত জামিন চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছেন গীতাঞ্জলি। কেন ন্যাশনাল সিকিওরিটি অ্যাক্টের আওতায় একজন পরিবেশকর্মীকে গ্রেফতার করা হল, প্রশ্ন তুলেছেন সোনম-পত্নী গীতাঞ্জলি। তবে সুপ্রিম কোর্ট কবে এই মামলা শুনবে, তা এখনও অজানা।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানে আয়োজিত হয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সম্মেলন। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন লাদাখের সমাজকর্মী তথা পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুক। এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে কুৎসা করা হচ্ছে সোনমকে নিয়ে, দাবি তাঁর স্ত্রীর। পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ খারিজ করে গীতাঞ্জলি। বলেছেন, ‘‘সোনম ওয়াংচুকের সঙ্গে যে পাক যোগের তত্ত্ব ছড়ানো হচ্ছে তা মিথ্যা ও মানহানিকর। আমাদের রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ওখানে। পরিবেশ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেছিলেন উনি।’’ সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ারও করেন সোনম-পত্নী।




