ভোটপর্ব শেষ হতেই দানা বাঁধল নতুন বিতর্ক। মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে প্রকাশ্যে এল অবাক কাণ্ড! রাজ্যের ভোটারদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গণনা করা ভোটের সংখ্যা এবং প্রদত্ত ভোটের মধ্যে বড় ধরনের অসঙ্গতি রয়েছে। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল গত লোকসভা নির্বাচনে। মহারাষ্ট্রের মতো ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যে যেনতেন প্রকারেণ ক্ষমতায় ফিরতে কি নির্বাচনী মেশিনারি ব্যবহার করে কোনও কারচুপি করেছিল বিজেপি? ঘনীভূত হচ্ছে সন্দেহ। ভারতের নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, চূড়ান্ত ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৬৬.০৫%, যা মোট ৬,৪০৮৮,১৯৫ ভোট প্রদানের সমান (মহিলা ৩০,৬৪৯,৩১৮; পুরুষ ৩৩,৪৩৭,০৫৭; অন্যান্য ১৮২০ জন)। তবে, গণনা করা মোট ভোটের সংখ্যা ৬,৪৫৯,২৫০৮, যা প্রদত্ত মোট ভোটের চেয়ে ৫,০৪,৩১৩ বেশি। অর্থাৎ, এই ৫,০৪,৩১৩ ভোটের পার্থক্যটি রাজ্যজুড়ে অতিরিক্ত গণনা করা মোট ভোটের পরিসংখ্যান। আটটি বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে গণনা করা ভোটের সংখ্যা প্রদত্ত ভোটের চেয়ে কম ছিল, কিন্তু বাকি ২৮০টি কেন্দ্রের ক্ষেত্রে গণনা করা ভোটের সংখ্যা প্রদত্ত ভোটের চেয়ে বেশি ছিল।
উল্লেখ্য, সবচেয়ে বড় অসঙ্গতি লক্ষ করা গিয়েছে আসতি এবং ওসমানাবাদ কেন্দ্রে। আসতি কেন্দ্রে গণনা করা ভোটের সংখ্যা প্রদত্ত ভোটের চেয়ে ৪,৫৩৮ বেশি, এবং ওসমানাবাদ কেন্দ্রে এই পার্থক্য ছিল ৪,১৫৫ ভোট। স্বাভাবিকভাবেই গত মে মাসে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোটারের উপস্থিতি সম্পর্কিত তথ্য এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা লিপিবদ্ধ করার জন্য ব্যবহৃত ফর্ম ১৭ সি নিয়ে বিতর্কের ইস্যুর প্রসঙ্গ উঠে আসছে। সেই সময় অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে বলেছিল, যাতে প্রতিটি ভোটপর্ব শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক ভোটার উপস্থিতির তথ্য প্রকাশ করা হয়। তারা প্রাথমিক এবং চূড়ান্ত উপস্থিতির পরিসংখ্যানের মধ্যে ৫-৬% পার্থক্যের কথা উল্লেখ করে এই পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছিল। তবে তখন সুপ্রিম কোর্ট এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। ভোটের বাস্তব চ্যালেঞ্জ ও নির্বাচন কমিশনের যুক্তি গ্রহণ করে তখন অবস্থান নিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেসময় নির্বাচন কমিশন বলেছিল যে এমন তথ্য প্রকাশের ফলে লজিস্টিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, তথ্যের অপব্যবহারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে, এবং এর সুস্পষ্ট আইনগত ভিত্তি নেই। নির্বাচন কমিশন আরও উল্লেখ করেছিল যে ফর্ম ১৭ সি-এর তথ্য প্রার্থীদের এজেন্টদের দেওয়া হয়। তবে এটি জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে নয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ফের এ নিয়ে উঠল বিতর্কের ঝড়।