নতুন বছরের শুরুতেই তৈরি হয়েছে ইতিহাস। কয়েক দশকের প্রাচীন প্রথা ভেঙে অবশেষে শবরীমালা মন্দিরের দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে প্রবেশ করতে সফল হয়েছেন ৫০ অনূর্ধ্ব দুই মহিলা। শুধু প্রবেশই নয়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের যথার্থ মান রেখে। ভগবান আয়াপ্পার মূর্তির সামনে পুজোও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তারপর থেকেই বিক্ষোভকারীদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। এমনকি এখনও বাড়িও ফিরতে পারেননি বিন্দু এবং কনকদুর্গা।
ঋতুমতী অবস্থায় পুজো দিলে আয়াপ্পা ক্রুদ্ধ হবেন, এই কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করেই কয়েক দশক ধরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স অবধি কোনও নারীর প্রবেশাধিকার ছিল না এই মন্দিরে। গত সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে বলে ভক্তদের মধ্যে লিঙ্গবৈষম্য করা যাবে না। যে কোনও বয়সের মহিলাকেই প্রবেশাধিকার দিতে হবে শবরীমালা মন্দিরে। সেই রায়ের পরই তা ঘিরে শুরু হয় অশান্তি৷ কট্টরপন্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে কেরল।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২৪ ডিসেম্বর শবরীমালায় ঢুকতে অসফল হন মহিলারা। কিন্তু নতুন বছরের ২ জানুয়ারি ভোরবেলা কেরলের কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ বছরের আইন অধ্যাপিকা বিন্দু আম্মিনি এবং ৩৯ বছরের সরকারি আধিকারিক কনকদুর্গা অসাধ্য সাধন করে দেখান। কনকদুর্গা বলেন, ‘অনেকেই আমাদের ফিরে আসতে বলেছিলেন। পুলিস অফিসার, আমাদের অনেক বন্ধু, কারণ তাঁরা জানতেন আমাদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হবে।’ বিন্দু বলেন, ‘আমরা কোনও ভয় অনুভব করছি না। আমাদের শুধু একটাই লক্ষ্য। আমরা শবরীমালায় প্রবেশ করতে চাই।’
শবরীমালায় বিন্দু এবং কনক দুর্গা প্রবেশের পরই কেরলে বিক্ষোভ শুরু হয়। পুরো গোটা দিন জুড়ে বনধ ডাকে বিজেপি। দুই মহিলা এখন কোথায় রয়েছেন তা কেউই জানেন না। তবে তাঁরা সুরক্ষিত আছেন বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে, কোচির কোথাও ওই দুই মহিলা গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। যাতে নতুন করে আর হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভ বা হুমকির মুখে না পড়তে হয় তাঁদের।