সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে যে আঙুল বেঁকাতে হয় সেতা বিলক্ষণ জানেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বার বার মুখে বলেও যে কাজ হয়নি কার্যত সেটাই এবার বাস্তবায়িত করতে তাঁর নির্দেশে রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হল। নজরে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। এই প্রকল্পে কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের একাধিক শহর এলাকা থেকে অভিযোগ আসছিল যে একশ্রেনীর বেসরকারি হাসপাতাল এই প্রকল্পে রোগী ভর্তি নিতে চাইছে না, চিকিৎসা পরিষেবাটুকুও দিতে চাইছে না। এই সমস্যা কোভিডের আগে থেকেই ছিল। বার বার বলেও এই ছবির বদল ঘটানো যায়নি। তাই এবার সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল যে বাংলার বুকে থাকা সব ধরনের বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যোগদান করতে বাধ্য। অর্থাৎ তাঁদের এই প্রকল্পে রোগী ভর্তি নিতে হবে, ভাল চিকিৎসা পরিষেবাও দিতে হবে,। রোগী প্রত্যাখান তাঁরা আর করতে পারবেন না।
স্বাস্থ্যসাথীতে বেসরকারি হাসপাতালের যোগদান যে বাধ্যতামূলক, এত দিন তা বলা হত শুধু মুখেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিক জনসভায় বেসরকারি হাসপাতালদের হুঁশিয়ারি দিয়ে আমজনতাকে বলেছেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রত্যাখ্যান হলে পুলিশের সাহায্য নিতে। কিন্তু এত কিছুর পরেও বহু বেসরকারি হাসপাতালই স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা দিতে অনীহা দেখিয়ে আসছে লাগাতার। এ বার তাই এ নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। একটি আদেশনামা মারফত রাজ্যের সব বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেওয়া হল, আইনের বলেই তারা প্রত্যেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় পরিষেবা দিতে বাধ্য। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকে জারি হওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট আইনের ৭ নম্বর ধারার অধীন ৩ নম্বর উপধারার স্পষ্ট বলা আছে, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি যে কোনও প্রকল্পে সব বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। আর স্বাস্থ্যসাথী যেহেতু রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প, তাই ১০টির বেশি শয্যাযুক্ত সব বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের তাতে অংশ নেওয়া কখনও ঐচ্ছিক হতে পারে না। তা বাধ্যতামূলকই। তাই এই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যে সব হাসপাতালে মিলবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার।