মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই বিধানসভায় জানিয়েছিলেন বাংলায় বেকারত্ব ৪০% কমে গেছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে ১২ লাখ কর্ম সংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সেই কথা রাখতেই বেশ কয়েকটি নতুন শিল্প তালুক গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশ্যে প্রায় ৪৫০০ কোটি টাকার লগ্নি হতে চলেছে উত্তরবঙ্গে। এর ফলে আগামী এক বছরে উত্তরবঙ্গের বেকারত্ব কমবে অনেকটাই। শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম বণিকমহল কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) আয়োজিত ‘নর্থ বেঙ্গল কনক্লেভ’-এ এই কথা জানালেন রাজ্যের অর্থ এবং শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র।
অমিত মিত্র জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গকে আরও বেশি করে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। শিল্পতালুক গড়ার জন্যে মোট ৪৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৯৭২ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়ে গেছে। বাকি ২৭০০ কোটি টাকার জন্যে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে শুক্রবার। এই সবটাই পেশ করা হবে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে।
কনক্লেভে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের চেম্বার অফ কমার্সের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের রংপুর চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আশরাফুল আলম জানান, ‘জয়েন্ট ভেঞ্চারে আমরা অনেক রকম কাজ করতে পারি। ভবিষ্যতে বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে তুলতে আগ্রহী আমরা। এই ধরনের মিটিং এক বছর পরপর না করে ৬ মাস অন্তর হলে আরও কাজে আসবে।’ সিআইআই–এর আঞ্চলিক অধিকর্তা কমলকিশোর তিওয়ারি বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য অনেকেই এগিয়ে আসছেন। তাঁরা কাজও শুরু করছেন।’
উত্তরবঙ্গের যে সব জায়গাতে এর আগে বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই সমস্ত কাজের অগ্রগতির রিপোর্ট প্রতি মাসে দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সিআইআই প্রতিনিধিদের কাছে জেনে নেন ফুলবাড়ি এলাকায় শিল্পাঙ্গনের কাজ কতটা এগিয়েছে, খোঁজ নেন জলপাইগুড়ির চৌভিটা এলাকায় শিল্পতালুকের কাজ বিষয়ে। বিন্নাগুড়ি এলাকায় শিল্পব্রত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তুলছেন মুরারিলাল ও তাঁর অংশীদার। এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
কালিম্পং-এও ১০ একর জমিতে শিল্পতালুক গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। খুব শীঘ্রই ওই জায়গা পরিদর্শনে যাবেন শিল্প দফতরের আধিকারিকেরা। দক্ষিণবঙ্গের মেটিয়াবুরুজের মতো উত্তরবঙ্গেও টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে বলেন তিনি। শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘জাপানের এক কোম্পানি হিমঘর দক্ষিণবঙ্গে কাজ করছে। উত্তরবঙ্গেও তারা দুটো অত্যাধুনিক হিমঘর তৈরি করবে বলে জানিয়েছে। সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই হিমঘর হবে।’ এনজেপির কাছে টি পার্ককে আরও গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী।
বালুরঘাটেও চলছে শিল্পতালুক গড়ার কাজ। সেখানে আরও একটি শিল্পতালুক হবে বলে ঘোষণা করেছেন মমতা। জানা গেছে মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাপের শিল্পই এখানে হবে। গুজরাট- সহ বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পোদ্যোগীরা আসতে উৎসাহী। গোটা বাংলাতে শিল্পের বিনিয়োগের চিত্রে বারে বারে ফুটে উঠছে উন্নয়নের বাংলাতেই এখন সব শিল্পদ্যোগীরা কাজ করতে ইচ্ছুক।