যে বাড়িতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল, যে বাড়ি থেকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি হওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন, প্রায় ছ’ মাস পর আবারও সেই ভিটেয় এসে উপস্থিত হলেন মুজিবর ইসলাম মজুমদার। কিন্তু এবার তিনি নিথর, কফিনবন্দি। আগরতলায় বাঁধাঘাটের মিলনপল্লিতে দুষ্কৃতী হামলায় নিহত তৃণমূল নেতা মুজিবরের কফিনবন্দী দেহ যখন পৌঁছল, সকালের আলো যেন ম্লান। এলাকায় শোকের আবহ।
এদিন বাঁধাঘাটে দলীয় নেতার মরদেহের সঙ্গে গেলেন বাংলার তৃণমূল নেতৃত্ব – ব্রাত্য বসু, শান্তনু সেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন ত্রিপুরার তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক। পরে সেখানে যান বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ, বরখাস্ত হওয়া আশিস সাহারাও। সকলেই মুজিবরের কফিনে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আজই সোনামুড়ায় হবে তাঁর শেষকৃত্য।
নিহত মুজিবর ইসলাম মজুমদার ত্রিপুরার সক্রিয় তৃণমূল নেতা বললে কমই বলা হয়। সেই বাম আমল থেকে সে রাজ্যে ঘাসফুলের সংগঠন গড়তে তাঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বিরুদ্ধে নিজে ভোটে লড়েছিলেন মুজিবর। সেখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। দুষ্কৃতীদের হামলায় এহেন এক নেতার মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই সে রাজ্যে ঘাসফুল শিবিরে বড় ধাক্কা।
এদিন মুজিবরকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ব্রাত্য বসু, শান্তনু সেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের সঙ্গে একই সারিতে দেখা গেল বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ, আশিস সাহাদেরও। তাঁরাও একযোগে দাবি তুললেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। রাজনৈতিক রং না দেখে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। আর এতেই স্পষ্ট, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরেও বিজেপি দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে অশনি সংকেত দেখছেন সকলে।