নাম না করে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামের সভা থেকে বললেন, ‘ওদের একদম বিশ্বাস করবেন না। ওরা দেবতাদের বিক্রি করে খায়’।
জুন মাসে দলের কোর কমিটির বর্ধিত বৈঠকে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। তারপর হুল দিবসে ঝাড়গ্রাম সফরেও গিয়েছিলেন মমতা। আজ সোমবার ফের জঙ্গলমহলের নতুন জেলায় সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরলেন উন্নয়নের কথা। বললেন, ‘আগে যখন আমি এখানে আসতাম, আমাকে এখানকার মানুষ নানান অভিযোগ করতেন। তখন জেনেছিলাম। বছরের অর্ধেক সময় না খেয়ে থাকেন জঙ্গলমহলের মানুষ। কিন্তু সরকারে আসার পর উজাড় করে দেওয়া হয়েছে মানুষের উন্নয়নে। এখন সব মানুষ দুটাকা কেজি চাল, গম পান। জনপ্রতি মাসে আট কেজি চাল আর তিন কিলো গম দেওয়া হয় সরকার থেকে। অর্থাৎ একজন মাসে ১১কেজি চাল-গম পান। একটা পরিবারে পাঁচ জন থাকলে সেই পরিবার মাসে ৫৫ কেজি চাল-গম পান। আমি শুনেছি অনেকের এত পরিমাণ চাল-গম লাগেনা। অনেকে আবার তা বিক্রিও করে দেন’।
সম্প্রতি লালগড়ের পূর্ণপানিতে শবর সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু নিয়ে চাপান উতোর হয়েছিল বাংলার রাজনীতিতে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে তার উত্তরও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেও সেই কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘অনাহার বা অভাবের কারণে ওই আদিবাসীদের মৃত্যু হয়নি। আমি বিশ্বাস করি না কেউ না খেয়ে আছে।
বিজেপির উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা যেমন হিন্দু-মুসলমান লড়াই লাগাতে চায়, তেমন আদিবাসী-মাহাতো লড়াই বাঁধাতে চায়। ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই। ভোটের আগে টাকার ঝুলি নিয়ে চলে আসে। ওদের টাকা নেবেন। কিন্তু ভোট দেবেন না। নোটবন্দি, জিএসটির কথা তুলেও কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন বাংলার মখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘নোটবন্দী করে কালো টাকা ফেরানো যায়নি৷ বিজেপি তাদের উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে ভোটে খরচ করছে৷ প্রান্তিক মানুষগুলোকে সেই টাকা দিয়ে বিজেপি ভোট কিনেছে৷ বিপথে চালিত করেছে’। তহবিলে বেশি অর্থের কারণে ভোটে বড় দলগুলো প্রচারে সুবিধা পায়৷ তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ এতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়৷
মমতার কথায়, ‘কিছু হলেই বলে দিচ্ছে জয় শ্রীরাম। তোমাদের রাম থাকলে আমাদের দুর্গা আছেন। রামচন্দ্রই তো দুর্গার পুজো করেছিল। ওদের নেতা রাম হলে আমাদের নেতা মা দুর্গা। আসলে ওরা রাবনের পুজো করে। ওরা দেবতাকে বিক্রি করে খায়। আর দেশে আগুন জ্বালায়’। জঙ্গলমহলে মাওবাদী দমনে নিজেদের নিজেদের সাফল্যের কথাও তুলে ধরে ছত্তিশগড়ে মাও মোকাবিলায় বিজপির ব্যর্থতাকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সঙ্গে দলীয়কর্মী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ বাইরে থেকে এসে মাথায় ফেট্টি বেঁধে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। মানুষের কাছে গিয়ে আসল কথাটা তুলে ধরুন’।