একই পরিবারের ৩ জন-সহ আসামে ৫ বাঙালি যুবককে খুন করল জঙ্গীরা। বৃহস্পতিবার রাতে তিনসুকিয়া জেলার খেরানিবাড়ি গ্রামের ঘটনা। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামবে তৃণমূল।
এই খুনের তদন্তে নেমে আলফার দুই আলোচনাপন্থী নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। অন্য দিকে অসমের বাঙালি সংগঠনগুলির ডাকে তিনসুকিয়ায় চলছে ১২ ঘণ্টার বন্ধ। তবে আসামের স্থানীয় বাঙালিদের বিশ্বাস, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিজেপির হাত আছে। কারণ নাগরিকপঞ্জী নিয়ে তারা ক্রমেই কোনঠাসা করছে এখানকার বাঙালিদের। এখন নিছক জঙ্গীদের দিয়ে দায় স্বীকার করানোর চেষ্টা চলছে।
ঘটনায় মৃতেরা মৃতেরা হলেন শ্যামলাল বিশ্বাস (৬০), অনন্ত বিশ্বাস (১৮), অবিনাশ বিশ্বাস (২৩), সুবল দাস (৬০) ও ধনঞ্জয় নমশূদ্র (২৩)। প্রত্যেকেই আসামের তিনসুকিয়া জেলার খেরানিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যায় সাদিয়ায় একটি দোকানে বসেছিলেন ৬ যুবক। তখনই সেনার পোশাকে সেখানে হাজির হয় কয়েকজন বন্দুকবাজ। এরপর যুবকদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রহ্মপুত্র নদীর চড়ে। সেখানে তাঁদের গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৪ জনের। গুরুতর আহত অবস্থায় ২ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। পরে তাঁদের মধ্যে আর একজনের মৃত্যু হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিস্তীর্ণ এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। অভিযুক্ত জঙ্গিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী কেশব মোহন্ত ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তপন কুমার। ঘটনায় ব্যথিত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে একটি টুইট করেছেন। লিখেছেন, ‘আসাম থেকে ভয়ঙ্কর খবর পেলাম। ৫ বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। শোকগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা আমাদের নেই। এমন ঘটনায় আমরা মর্মাহত। অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি হওয়া উচিৎ’।
ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘বিগত লোকসভা ও রাজ্যসভা অধিবেশ্ন চলাকালীন সমস্ত বিরোধী দল মিলে নাগরিকপঞ্জী নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। সেই স্মারকলিপি আজ আমরা প্রকাশ করে দেব। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তিনসুকিয়ায় পরিবারগুলির ভিডিও আমরা আনিয়েছি। আমরা আসামের বাঙালিদের পাশে আছি। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন’।