প্রায় হাতের বাইরে চলে যাওয়া ম্যাচ জিতে নিল রাজস্থান রয়্যালস। রুদ্ধশ্বাস এই ম্যাচ যে স্টিভ স্মিথের দল জিতে নেবে, তা হয়তো অতি বড় রাজস্থান সমর্থকরাও ভাবেননি। প্রথমে স্টিভ স্মিথ (২৭ বলে ৫০), পরে সঞ্জু স্যামসন (৪২ বলে ৮৫), রাহুল তেওয়াটিয়া (৩১ বলে ৫৩) ও জোফ্রা আর্চারের (৩ বলে ১৩) ঝড়ে পঞ্জাবকে মাটি ধরাল রাজস্থান।
আইপিএলের ইতিহাসে রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ল রাজস্থান। এর আগে এই রেকর্ড ছিল তাদেরই দখলে। ২০০৮ সালে ডেকান চার্জার্সের ২১৪ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল রাজস্থান। তখন অবশ্য রাজস্থানে শেন ওয়ার্ন জমানা। এ দিন নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভাঙল।টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২২৩ রানও যে নিরাপদ নয়, তা দেখিয়ে দিল এদিনের ম্যাচ। কাজে এল না ময়ঙ্ক আগরওয়ালের দুরন্ত সেঞ্চুরিও।
এর আগে পাঞ্জাবের হয়ে ওপেন করতে নেমে ৫০ বলে ঝোড়ো ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। মারেন সাতটি ছয় ও ১০টি চার। প্রথম ম্যাচ থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ব্যাটসম্যানটি। তিন ম্যাচ যেতে না যেতেই তাঁর ব্যাটিং গড় ৭৩.৬৬। মোট রান ২২১। তার মধ্যে রবিবার রাতে শারজায় রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের তুলোধনা করে আইপিএলে তাঁর প্রথম শতরানও রয়েছে। ওপেনিং জুটিতে ক্যাপ্টেন লোকেশ রাহুলের সঙ্গে মায়াঙ্ক যোগ করেন ১৮৩। কিংস ইলেভেনের রেকর্ডে এটা দ্বিতীয় সর্বাধিক। এর আগে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও শন মার্শ ২০১১ সালে দ্বিতীয় উইকেটে তুলেছিলেন ২০২ রান। যা এদিন সহজেই টপকে যেতে পারতেন মায়াঙ্ক-লোকেশ জুটি। তাতে অবশ্য লজ্জা বাড়ত রাজস্থানের। শতরানের পর মায়াঙ্ক আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। শেষ পর্যন্ত টম কুরানের বলে তিনি সঞ্জু স্যামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। মায়াঙ্ক আউট হওয়ার পর অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে দকে এগিয়ে নিয়ে যান লোকেশ রাহুল। ৫৪ বলে ৬৯ করেন তিনি। শেষদিকে নিকোলাস পুরান ৮ বলে ২৫ ও ম্যাক্সওয়েল ৯ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
ওভার পিছু এগারোর উপর রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস শুরুতেই জট বাটলারের (৪) উইকেট হারায়। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ আস্কিং রেট কমিয়ে আনার মরিয়া চেষ্টা চালান পাওয়ার প্লে’তে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন সঞ্জু স্যামসন। দ্বিতীয় উইকেটে ৮১ রান যোগ করেন তাঁরা। স্টিভ স্মিথ ২৭ বলে ৫০ করে আউট হয়ে যাওয়ার পরও হাল ছাড়েননি সঞ্জু। ৪২ বলে ৮৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে জয়ের আশা জাগিয়ে তোলেন তিনি। মারেন ৪টি বাউন্ডারি ও ৭টি ছক্কা। সঞ্জু ফিরে যাওয়ার পর টার্গেট ছিল ২৩ বলে ৬৪ রান। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তরুণ রাহুল তেবাতিয়া। ৩১ বলে ৫৩ করে দলের জয় কার্যত পাকা করে ফেলেন তিনি। শেষদিকে জোফ্রা আর্চারও খেলেন ৩ বলে অপরাজিত ১৩ রানের মূল্যবান ইনিংস। ১৯.৩ ওভারে ৬ উইকেটে রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় ২২৬ রান।